অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধারের তদন্তে রোজই উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। আর এবার অর্পিতার জীবনবিমার প্রিমিয়াম নিয়ে তদন্তে নামলেন ইডির গোয়েন্দারা। অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমার টাকা কোথা থেকে আসত তা জানতে LIC-র সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন তারা। তদন্তে জানা গিয়েছে, এই ৩১টি জীবনবিমার নমিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, প্রতিটি জীবনবিমায় বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে প্রিমিয়াম জমা পড়ত। অর্থাৎ সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার জীবমবিমা প্রিমিয়াম দিতেন অর্পিতা। কোথা থেকে এই বিপুল টাকা পেতেন তিনি? কেন তিনি এতগুলি জীবনবিমা করেছিলেন, সেসব খতিয়ে দেখা শুরু করেছে ইডি। অর্পিতার জীবনবিমার প্রিমিয়াম কী ভাবে জমা পড়ত? কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে জমা পড়ত তার জীবনবিমার প্রিমিয়াম? জানতে LIC কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইডি।
দীর্ঘদিন বাড়ি তালাবন্ধ থাকলে ভেঙে পরিষ্কার করবে পুরসভা, ডেঙ্গি রুখতে সিদ্ধান্ত
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অর্পিতার টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছে এই জীবনবিমার নথিগুলি। ৩১ জীবনবিমার প্রতটির নমিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও জেরায় পার্থ দাবি করেছেন তিনি অর্পিতাকে ভালোভাবে চেনেনই না। তাহলে কেন অর্পিতা তাঁর জীবনবিমার নমিনি পার্থকে করতে গেলেন তা জানার চেষ্টা চলছে।
গত ২২ জুলাই বিকেলে টালিগঞ্জের ডায়মন্ড সিটি সাউথ আবাসনের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। এক সপ্তাহ পর বেলঘরিয়ার ক্লাবটাউন হাইটসের ফ্ল্যাটে উদ্ধার হয় ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। সঙ্গে প্রায় ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের গয়না। গত ২২ জুলাই গভীর রাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। সেই থেকে ইডি হেফাজতে ছিলেন পার্থ ও অর্পিতা। গত শুক্রবার তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। আপাতত প্রেসিডেন্সি জেলের বাসিন্দা তিনি।
৭৫০ স্কুলপড়ুয়ার তৈরি ‘আজাদিস্যাট’ নিয়ে মহাকাশে ISRO-র রকেট, শেষ মুহূর্তে বিপত্তি
এরই মধ্যে তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। অর্পিতা ও পার্থর একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। ২ জনের যৌথ মালিকানায় একাধিক কোম্পানির খোঁজও পাওয়া গিয়েছে। ইডির অনুমান, ওই ভুয়ো কোম্পানিগুলির মাধ্যম কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে যুগল।
যদিও পার্থর দাবি টাকা তার নয়। এমনকী অর্পিতাকেও ভালো করে চেনেন না তিনি। অর্পিতাও স্পষ্ট করেছেন টাকা তাঁর নয়। এমনকী তাঁর ফ্ল্যাটে যে বিপুল টাকা রাখা হয়েছে তাও জানা ছিল না। তাঁর অজান্তে ও অনুপস্তিতিতে টাকা মজুত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।