রাজ্য সরকার যতই বলুক, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়নি। তা মানতে নারাজ কলকাতা হাইকোর্ট। আর এই আবহে এদিন ভোট পরবর্তী হিংসার মামলার শুনানিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টে এহেন নির্দেশে নিজেদের জয় দেখছে বিজেপি। হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা দলের পক্ষ থেকে যেই অভিযোগ করছিলাম, হাইকোর্টের রায় সেই অভিযোগকেই মান্যতা পেল। মুখ পুড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের।'
এদিকে এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, 'হাইকোর্ট নির্দেশ দিতেই পারে। কিন্তু যাদবপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নেওয়ার পর রাজ্যে কোনও হিংসা হয়নি।'
আজ মামলার শুনানিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে আরও সময় চাওয়া হয়। তাদের তরফে বলা হয়, যে সমস্ত অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে তা খতিয়ে দেখতে আরও সময় প্রয়োজন। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা এখনও পরিদর্শন করা হয়নি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্ট আপাতত ১৩ জুলাই পর্যন্ত কমিশনকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় পুলিশের কাছে যত অভিযোগ এসেছে সবগুলির এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে সব আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও তাদের রেশনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কারও রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে অবিলম্বে রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কলকাতার আলিপুর কমান্ডো হাসপাতলে বেলেঘাটার বিজেপি নেতা অভিজিৎ সরকারের দেহের দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করতে হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা যাদবপুর এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় ডিসিপি সাউথ সাবার্বান রশিদ মুনির খানকে শোকজ নোটিশ ইস্যু করেছে আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে না, জানাতে হবে ডিসিপিকে । একইসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় প্রয়োজনীয় সমস্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করতে। ১৩ জুলাই ফের শুনানি এই মামলার।