বাঘাযতীন হুড়মুড়িয়ে হেলে পড়ে চারতলা ফ্ল্যাট। সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়।অনেকেরই বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে সেই ভিডিয়ো। মূলত যারা বহুতলে থাকেন, ফ্ল্য়াটে থাকেন, কী ধরনের সামগ্রী দিয়ে সেই ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে সেটা তারা জানেন না, তাঁদের কাছে আতঙ্কের কারণ এই ঘটনা। জলাভূমি বুজিয়ে এই ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছিল বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের।
২০১০ সালে এই ফ্ল্যাট তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। ২০১৪ সাল থেকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের কাজ হচ্ছিল। লোন নিয়ে ফ্ল্যাট কিনে একী অবস্থা! আপাতত জানালা দিয়ে কর্মীরা ভেতরে ঢুকে ভাঙার কাজ করছেন।
তবে এবার বাঘাযতীনের সেই হেলে পড়া ফ্ল্যাট ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হল। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, পুরসভা, দমকল, পুলিশ একযোগে এলাকায় রয়েছে। আপাতত চারতলার ফ্ল্যাটে যেতে পেরেছেন কর্মীরা। কী পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে তা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। যত দ্রুত সম্ভব সেই ফ্ল্যাট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ এই হেলে পড়া বিল্ডিং থেকে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তবে আশার কথা একটাই যে ওই ফ্ল্যাটে কোনও আবাসিক ছিলেন না। সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার জন্য সকলেই চলে গিয়েছিলেন অন্যত্র।
এদিকে বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই শুভ অ্যাপার্টমেন্টে আগে থেকেই ফাটল দেখা দিয়েছিল। এনিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
তবে ওই ফ্ল্যাটে আবাসিকদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র থেকেই গিয়েছে। সেকারণে সেগুলি সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ ফ্ল্যাট ভাঙা হলে সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফ্ল্যাট ভাঙার জন্য জেসিবি আনা হয়েছে। সেই জেসিবি দিয়ে ভাঙার কাজ করা হবে।
সূত্রের খবর, ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি চারতলাযুক্ত। প্রতি তলায় দুটি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। আগে থেকেই কিছুটা হেলে গিয়েছিল এই ফ্ল্যাট বাড়িটি। প্রমোটার কাজ করছিলেন গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে। সেকারণে আবাসিকদের অন্য়ত্র সরানো হয়েছিল। তবে গোটা ঘটনায় আবাসিকদের মধ্যে, প্রতিবেশীদের মধ্যে ভয়াবহ উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরেই এলাকায় যান দুই কাউন্সিলর। কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার এলাকায় যান।
মিতালি বলেন, এখানে তিনতলা পর্যন্ত ফ্ল্যাট করা যায়। কিন্তু তারও অনুমতি লাগে। তিনি জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটটি পুরো ভেঙে দেওয়া হবে। আমরা চাইব প্রোমোটারকে পুলিশ অবিলম্বে গ্রেফতার করুক।
স্থানীয় বিধায়ক জানিয়েছেন, ১০-১২ বছরের পুরনো ফ্ল্যাট। হরিয়ানার একটা সংস্থা বাড়িতে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তবে এই কাজের জন্যও অনুমতি নিতে হয়। সেটা নেওয়া হয়নি। অনুমতি ছাড়া এই কাজ কীভাবে হচ্ছিল সেটা খতিয়ে দেখা হবে।