'জামিন হওয়াই দস্তুর, জেল হওয়া ব্যতিক্রম' - আইনের সেই সাধারণ নীতি প্রয়োজ্য হবে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের (PMLA) ক্ষেত্রেও। এমনই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের মামলায় প্রেম প্রকাশ নামে এক ব্যক্তির জামিন মঞ্জুরের সময় বুধবার সেই পর্যবেক্ষণ করেছে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ। যে প্রেম আদতে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে দাবি করা হয়। আর সেই পর্যবেক্ষণের ফলে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা কোনও ‘লাইফলাইন’ পান কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
'জামিন হওয়াই দস্তুর, জেল হওয়া ব্যতিক্রম'
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছে, ‘মণীশ সিসোদিয়া মামলায় যে রায় দেওয়া হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে আমরা বলেছি যে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের ক্ষেত্রেও জামিন হওয়াই দস্তুর এবং জেল হওয়া ব্যতিক্রম। ৪৫ নম্বর ধারায় জামিনের শর্ত উল্লেখ করা আছে। কোনও ব্যক্তির স্বাধীনতাই হল দস্তুর। আর সেখান থেকে চ্যুতির বিষয়টি ব্যতিক্রম। যা আইন দ্বারা সিদ্ধ।’
জামিন মঞ্জুর প্রেমের
সেই মামলায় শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। আর প্রত্যক্ষদর্শীদের একটা লম্বা তালিকা আছে, যাঁদের 'পরীক্ষা' হবে। সেইসঙ্গে বিচারপতি গভাই এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জানিয়েছে যে প্রাথমিকভাবে প্রেমকে অভিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে না। আর তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার সম্ভাবনা নেই। সেই পরিস্থিতিতে তাঁকে জামিন দেওয়া যেতে পারে বলে জানায় বিচারপতি গভাই এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।
ওই মামলায় ইডির তরফে হাজির ছিলেন ভারতের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু। ছিলেন আইনজীবী জোহেব হোসেন, আন্নাম ভেঙ্কটেশ, কানু আগরওয়াল, আকৃতি মিশ্ররা। অন্যদিকে, প্রেমের হয়ে সওয়াল করেন রঞ্জিত কুমার, সিদ্ধান্ত আগরওয়াল, অনুসূয়া সাধু সিনহা, ইন্দ্রজিৎ সিনহা, স্নেহ সিংয়ের মতো আইনজীবীরা।
পার্থদের কি কোনও লাভ হবে?
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সুপ্রিম কোর্টের সেই পর্যবেক্ষণের ফলে পার্থ, জ্যোতিপ্রিয়দের মতো নেতাদের কোনও লাভ হবে কিনা, তা সময় বলবে। দু'জনেই আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছেন। পাননি জামিন। থাকতে হচ্ছে জেলেই। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। আর গত বছরের অক্টোবরে জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
আরও পড়ুন: কাটল ৮ বছরের আইনি জট, উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার জনকে নিয়োগের নির্দেশ হাইকোর্টের