প্রায় ১৫ কেজির কাতলা কেটে কলকাতায় ‘মাছ-ভাত’ উৎসব পালন করল বাংলা পক্ষ। তবে শুধু একটা মাছ নয়, বড়বাজারের কাছে গিরিশ পার্কের সামনে আরও একাধিক মাছ কেটে সেই বিশেষ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রাস্তায় বসেই সেই বিশাল মাছ কাটা হয়। বিভিন্ন খাবার রান্না হয়। রান্না করা হয় শুটকি মাছও। বাংলা পক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, কলকাতার বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত বা তৃণমূল কংগ্রেসের আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা বাংলার সংস্কৃতির বিরোধী মন্তব্য করেছেন। সেটার পালটা হিসেবেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। বাংলা পক্ষের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি হুংকার দিয়ে বলেছেন, ‘মীনাদেবী পুরোহিত, শত্রুঘ্ন সিনহা সহ বাঙালির শত্রুদের উদ্দেশ্যে বাংলা পক্ষের নিবেদন। মাছ- ভাত আসছে তেড়ে….।’
‘আরও গা গোলাবে’, কটাক্ষ বাংলা পক্ষের
শুধু তাই নয়, বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেছেন, যাঁরা মাছ-ভাতের বিরোধিতা করেন, তাঁদের জন্য এই মাছ-ভাত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আবার বাংলা পক্ষের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক জানিয়েছেন, যাঁরা বাংলার মাছ, মাংস-সহ আমিষ খাবারের পরিবর্তে নিরামিষ পথ্য চালু করার পক্ষে দাবি তুলেছেন, তাঁদের ‘মাছ-ভাত’ উৎসব দেখে আরও গা গোলাবে। যে কথাগুলো বলার সময় বাংলা পক্ষের সদস্যরা আবার হাতে গোটা-গোটা মাছ ধরেছিলেন।
আমিষ খাবার বন্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য শত্রুঘ্নর
আর এমন একটা সময় বাংলা পক্ষের তরফে সেই ‘মাছ-ভাত’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে, যখন তৃণমূলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সওয়াল করেছিলেন যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমিষ খাবার নিষিদ্ধ করা উচিত। সেই মন্তব্য নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। এমন একটি রাজ্য থেকে তিনি সাংসদ হয়েছেন, যেখানকার মানুষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মাছ ও আমিষ খাবার যুক্ত হয়ে আছে। এমনকী শত্রুঘ্নর দলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কারও উপরে জোর করে খাদ্যাভ্যাস চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন।
বিতর্কের মুখে বয়ান বদল তৃণমূল সাংসদের
সেই পরিস্থিতিতে শত্রুঘ্নর মন্তব্য নিয়ে তিনি যে একেবারে সন্তুষ্ট নন, সেই বার্তাটা মমতা স্পষ্টভাবে দেন বলে সূত্রের খবর। আর তারপরই নিজের মন্তব্য নিয়ে সাফাই দেন আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ। পালটে ফেলেন নিজের কথা। তিনি দাবি করেন, তৃণমূল কখনও কারও খাদ্যাভ্যাসের উপরে জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। আর তিনিও সেটাও বিশ্বাস করেন বলে দাবি করেন আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ।