আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। সকাল থেকেই ঘাটে ঘাটে তর্পণ চলছে। হাতে আর বেশি সময় নেই। আর একসপ্তাহ পর গোটা রাজ্য মেতে উঠবে শারদ উৎসবে। এই আবহে নবম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল বাঁশদ্রোণীতে। পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। দুর্ঘটনাস্থলে কাউন্সিলর বিকেল গড়িয়ে গেলেও এল না বলে অভিযোগ। তাই বিক্ষোভ থামাবে না বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় উত্তেজিত জনতার। কিন্তু স্থানীয় কাউন্সিলর না আসায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে। স্থানীয় এক নেতা ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। বেগতিক বুঝে ওই নেতা এলাকা ছাড়েন। জনগণকে শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
আজ মহালয়ার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাঁশদ্রোণী। কারণ একটি জেসিবি পিষে দেয় এক স্কুল ছাত্রকে। সে কোচিং ক্লাসে টিউশনি পড়তে যাচ্ছিল। তখন একটি জেসিবি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই পড়ুয়াকে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। তারপর থেকেই আলোড়ন পড়ে যায় গোটা এলাকায়। এই ঘটনাকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায়। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে জেসিবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর, বিধায়ককে আসতে হবে। তবেই বিক্ষোভ উঠবে। এই আবহে পাটুলি থানার ওসিকে কাদা জলে নামিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তার বেহাল দশা বোঝাতেই কাদায় নামানো হয় ওসিকে। ওসিকে ঘিরে বিক্ষোভ চললে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ওসিকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: মহালয়ার সকালে ছাত্রকে পিষে দিল জেসিবি, বাঁশদ্রোণীতে মর্মান্তিক মৃত্যুতে ধুন্ধুমার
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর শেষেই ভাসান পদ্মার ইলিশেও, ওপার বাংলার রূপোলি শস্য মিলবে না ভাইফোঁটায়!
বাঁশদ্রোণীর ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশেরসাউথ সাব আরবান শাখার ডেপুটি কমিশনার।পাটুলি থানার ওসিকে টানতে টানতে এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। এক কনস্টেবলকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। ডিসি জানান, ঘাতক জেসিবির চালকের খোঁজ চলছে। ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। রাস্তার কাজ করা হচ্ছিল। তখন একটি জেসিবি ধাক্কা মারে পড়ুয়াটিকে। তার তখনই মৃত্যু হয়। আমরা পরিবারের পাশে আছি। এমন ঘটনা কখনই কাম্য নয়।’
সংবাদমাধ্যমে কাউন্সিলরের এই বক্তব্য এলাকার মানুষজন শুনেছেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভিজছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর এলাকার রাস্তার অবস্থা বেহাল। স্থানীয় কাউন্সিলরকে দ্রুত মেরামতির কাজ শেষ করতে বলা হয়। কিন্তু ওই রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে বলে তাঁদের দাবি। দীর্ঘদিন রাস্তার কাজ চলায় সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এখানেই নবম শ্রেণির সৌম্য শীল সাইকেল নিয়ে পড়তে যাচ্ছিল। পিছন থেকে জেসিবিকে যাওয়ার জন্য রাস্তা ছেড়ে দিলেও তাকে ধাক্কা মারে। পুলিশ দেরিতে আসায় ক্ষোভ আরও চরমে ওঠে। ভাঙচুর করা হয় গাড়িতে। পুলিশকে আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। তাড়া করা হয় পুলিশ কর্মীদের। রাস্তায় গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেও জল জমে যায় বলে অভিযোগ। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনেছি। আমরা পুরসভার অফিসারদের সেখানে পাঠিয়েছি। এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি চলছিল। তখন এই ঘটনা ঘটেছে। দোষীরা নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে।’