খাস কলকাতায় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বানতলার ট্যানারির পাইপলাইন পরিষ্কার করতে নেমে সাতসকালে তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। লেদার কমপ্লেক্সের থানার অন্তর্গত বানতলায় মৃত্যু হয়েছে কেএমডিএ’র তিনজন সাফাইকর্মীর। ইতিমধ্যেই তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ট্যানারির বর্জ্যের দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজন শ্রমিকের। কলকাতা পুরসভা এই তিনজনকে সাফাইয়ের কাজে নিয়োগ করেছিল। আজ, রবিবার ছুটির দিনে এসে মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর সামনে এল। যা নিয়ে তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত তিন সাফাইকর্মীর নাম ফরজেম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার। আজ, রবিবার সকালে লেদার কমপ্লেক্সের ৪৫২ নম্বর প্লটে ট্যানারির পাইনলাইন পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন শ্রমিকরা। পাইপলাইন পরিষ্কার করতে নামার পর দীর্ঘক্ষণ তাঁদের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। ফারজেম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার—তিন শ্রমিকের কেউই বেরিয়েও আসছিলেন না। তখন সন্দেহ হওয়ায় খবর দেওয়া হয় থানায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দল। উদ্ধার করা হয় তিন যুবকের দেহ। লেদার কমপ্লেক্সের ভিতরে সেক্টর ৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অধীনে সাফাইয়ের কাজ চলছিল। আজ সেখানে দুর্ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাজেটে ‘হোম স্টে’–‘মুদ্রা ঋণের’ ঘোষণা, শর্ত অজানা থাকায় ধন্দে ব্যবসায়ীরা
অন্যদিকে দেহ তিনটি পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ভিতরে আর কেউ আটকে আছেন কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বর্জ্যের দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন শ্রমিকের। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিললেই মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আসবে। নিয়ম মেনে সব সুরক্ষার বন্দোবস্ত করে ওই শ্রমিকরা পাইপলাইন পরিস্কার করতে নেমেছিলেন কি? উঠছে প্রশ্ন। তবে পাইপলাইন ফেটে ভিতরে পড়ে যান তিনজন বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। তাঁদের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং দমকল।
এছাড়া স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, নিকাশি নালার পাইপলাইন পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে একজন নেমেছিলেন। কিন্তু তিনি উঠছেন না দেখে বাকি দু’জনও নেমে পড়েন। তিনজনের কেউ আর নিকাশি নালার ভিতর থেকে ওঠেননি। ম্যানহোল বা নিকাশি নালায় মানুষ নামিয়ে কাজ ২০১৩ সালে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বিশেষ পরিস্থিতিতে ম্যানহোলে মানুষকে নামাতে হলে আগে নিশ্চিত করতে হবে ভিতরে প্রাণঘাতী গ্যাস আছে কিনা। কর্মীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিশেষ অ্যাপ্রনে ঢাকতে হবে। হাতে দস্তানা এবং পায়ে গামবুট পরতে হবে। কর্মীদের বিশেষ ধরনের মুখোশ পরতে হবে। অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ কি মানা হয়েছিল? উঠছে প্রশ্ন।