সম্প্রতি একটা ঘটনা ঘটেছিল বানতলা চর্মনগরী এলাকায়। সেখানে তিন শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন ম্যানহোলে নেমে কাজ করতে গিয়ে। তা নিয়ে বেশ শোরগোল পড়ে যায় বাংলায়। বানতলা চর্মনগরী পরিচালনা এখন করতে চায় রাজ্য সরকার। তাতে নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা অনেকটা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই বানতলা চর্মনগরীর দায়িত্ব নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। এতদিন বানতলা চর্মনগরী দেখভাল করত ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু এত বড় একটা জায়গা এবং কর্মযজ্ঞ সেটা স্রেফ একটা সংগঠনের হাতে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে না। নবান্ন সূত্রে খবর, এই বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে সংগঠনের কর্তাদের এই প্রস্তাব দেওয়া হলে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দেন।
বানতলা চর্মনগরীকে যাতে আরও উন্নতমানের করা যায় এবং সেখানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা যায় সেই চেষ্টায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই এমন প্রস্তাব দিয়েছেন। এই নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, বানতলা চর্মনগরী পরিচালনার দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিতে চায়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর ও নগোরন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ–সহ সিনিয়র অফিসাররা। এই প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী দিতেই তাতে রাজি হন ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। তখন আলোচনা হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে। চর্মনগরীর পরিচালনার দায়িত্বে আসতে চলেছে কেএমডিএ বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: ‘বাংলা আপনার জন্য সবসময় স্বপ্ন হয়ে থাকবে’, বিজেপি নেতাকে ঠুকলেন দেবাংশু
রাজ্যে এখন বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। শিল্প–কলকারখানা বেড়ে উঠুক চাইছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আর তাহলেই বাংলার ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবেন। বিপুল কর্মসংস্থান হলেই মানুষের হাতে টাকা আসবে। আর অর্থনীতির চাকা জোরে ঘুরবে। সেক্টর–৫ তথ্যপ্রযুক্তি হাব রয়েছে নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটির অধীনে। আর ২০১৫ সাল থেকে বানতলা চর্মনগরী সরকারিভাবে নগোরন্নয়ন দফতরের অধীনে আছে। সেক্টর–৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপের অংশ হয়ে। কদিন আগে চর্মনগরীর নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তখন থেকেই কড়া অবস্থান নেয় নবান্ন। যার জন্য শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়। তাই সেক্টর–৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ বা বানতলা চর্মনগরীর পরিচালনার দায়িত্ব হাতে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। যাতে আরও উন্নতি ঘটানো যায়।
এই বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ক্যালকাটা লেদার কমপ্লেক্স ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা রাজি হওয়ায় নতুন পথ খুলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। এই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক জিয়া নাফিস বৈঠক শেষে বলেন, ‘রাজ্য সরকার প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা তাতে রাজি হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে এবার সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হবে। আর তারপরই রাজ্য সরকারকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’ রাজ্য সরকারের আওতায় এলে চর্মনগরীর জল, নিকাশি, আলো–সহ নানা পরিষেবা কেএমডিএ দেবে বলে সূত্রের খবর।