দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর NEET পরীক্ষার্থী রক্ষিত মিত্তল বেলঘরিয়ার বাড়িতে ফিরে এলেন। বৃহস্পতিবার সকালে বাবা অশোক মিত্তলকে ফোন করেন রক্ষিত। তার পরই দমদম এয়ারপোর্ট থেকে তিনি ছেলেকে নিয়ে আসেন। টানা দু’দিন নানা উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকার পর স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলছেন রক্ষিতের পরিবার।
রক্ষিত পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৩ সেপ্টেম্বর তাঁর NEET–এর পরীক্ষায় বসার কথা। পরীক্ষার প্রস্তুতি মনের মতো না হওয়ায় প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগছিলেন তিনি। অসহ্য সেই চাপ থেকে মুক্তি পেতেই বাড়ি থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো মঙ্গলবার সকালে কিছু টাকা নিয়ে নিজের স্কুটিতে চেপে বাড়ি ছাড়েন রক্ষিত। মাকে জানিয়ে যান যে তিনি আলমবাজার লক্ষ্মীনারায়ণের মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছেন। পুজো দিয়ে আর তখন বাড়ি ফেরেননি। দত্তপুকুর হয়ে শিলিগুড়ির উদ্দেশে জাতীয় সড়ক ধরেন।
রক্ষিতের ইচ্ছে ছিল, ওখানে গিয়ে কোনও কাজ জুটিয়ে নেবেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদ বেলডাঙার কাছে স্কুটিটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি। সঙ্গে ছিল মাত্র ১৫০০ টাকা। শেষে স্কুটিটি রাস্তার ধারে রেখে দিয়ে টোটোয় বহরমপুর বাস স্ট্যান্ডে আসেন। সেখান থেকে শিলিগুড়ির বাসে ওঠেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তাঁর মন কু ডাক দেয়। তাঁর আত্ম–উপলব্ধি হয় যে কাজটা ঠিক হয়নি। পরক্ষণেই শিলিগুড়ি থেকে কলকাতাগামী বাসে উঠে পড়েন। বাস থেকেই বাড়িতে ফোন করে জানান যে তিনি বাড়ি ফিরছেন।
বেলঘরিয়া ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ফ্লাটে থাকতেন রক্ষিতরা। তাঁর ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে। সে জন্যই NEET পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন। এটি তৃতীয়বারের চেষ্টা। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতির জেরে ঠিক কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি। ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। আর তার থেকে বাড়ি থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন অনেকে। কিন্তু শুধুই পড়াশোনার চাপ নাকি বাড়ি থেকে পালানোর পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।