বিহারের পুনরাবৃত্তি কি বাংলার বিধানসভা ভোটেও করতে পারবে এআইএমআইএম? তাতে কতটা ধাক্কা খাবে তৃণমূল কংগ্রেস? সেইসব হিসেবনিকেশের মধ্যেই বাংলায় বড়সড় ধাক্কা খেল আসাউদ্দিন ওয়েইসির দল। রাজ্যে এআইএমআইএমের আহ্বায়ক শেখ আনোয়ার পাশা-সহ দলের একাধিক কর্মী তৃণমূলে যোগ দিলেন।
সোমবার দুপুরে তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে ব্রাত্য বসুর উপস্থিতিতে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন পাশা। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, বাংলার সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকেন। তাঁদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশার কথায়, ‘ভোটের কাটাকুটির হিসাবে বিহারে গেরুয়া শক্তি ক্ষমতা দখল করেছে। বিহারে যা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।’ একইসঙ্গে তাঁর আর্জি, বিজেপিকে রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে হবে।
সদ্য বিহারের নির্বাচনে ‘মহাগঠবন্ধন’-এর সংখ্যাগরিষ্ঠতার স্বপ্ন চুরমার করে দেয় এআইএমআইএম। বিহারের সীমাঞ্চলের সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত অঞ্চলে ওয়েইসির দলের প্রার্থীরা ভালো ফল করেন। সবমিলিয়ে বিহারে পাঁচটি আসনে জেতে এআইএমআইএম। মোট শতাংশের বিচারে সেই সংখ্যাটা নগণ্য হলেও এআইএমআইএমের দাপটে পালটে যায় বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণ। কপাল পুড়েছিল তেজস্বী যাদবদের। পুরোপুরি ফায়দা পেয়েছিল এনডিএ। সেজন্য এআইএমআইএমকে বিজেপির ‘বি’ টিম হিসেবেও কটাক্ষ করা হয়।
তাতে অবশ্য দমেননি ওয়েইসি। বরং তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূল জোট না করলে বাংলায় একাই লড়বে তাঁর দল। মুখে স্বীকার না করলেও সেই ঘোষণায় সিঁদুরে মেঘ দেখছিল তৃণমূল। বিশেষত বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাকফুটে আছে ঘাসফুল শিবির। তার মধ্যে এআইএমআইএম সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসালে তা তৃণমূলের কাছে বড়সড় ধাক্কা হতে পারত। রাাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির সঙ্গে ‘কঠিন লড়াইয়ে’ যা শেষপর্যন্ত নির্ধারকও হতে পারত। সেই পরিস্থিতিতে ভোটের মাত্র পাঁচ মাস আগে বাংলায় এআইএমআইএমের ‘প্রধান মুখ’ ঘাসফুল পতাকা হাতে তুলে দেওয়ায় তৃণমূল অনেকটাই স্বস্তি পেল মত বলে সংশ্লিষ্ট মহলের।
যদিও এআইএমআইএমের তরফে পালটা দাবি করা হয়েছে, শেখ আনোয়ার পাশা-সহ বাকিরা দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই। বরং বছরখানেক আগে থেকেই দলবিরোধী কাজে লিপ্ত ছিলেন না তাঁরা।