স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
রাজ্য সরকার করোনায় আক্রান্ত ও মৃতদের তথ্য গোপন করছে বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। অভিযোগ, করোনায় মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতে রীতিমতো কমিটি বানিয়ে ফেলেছে রাজ্য সরকার। এবার সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য পেশ করল রাজ্যের প্রাক্তন শাসকদল সিপিএম। বুধবার দলের মুখপত্র গণশক্তিতে দাবি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩০। যা রাজ্যের ঘোষিত মৃতের সংখ্যা থেকে অন্তত ২৩ বেশি। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পেশ করা শেষ বুলেটিন অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৭।
গণশক্তির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র মারফত তারা জানতে পেরেছে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩০। যার মধ্যে শুধুমাত্র মঙ্গলবারই মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। যদিও রাজ্য সরকারের পেশ করা তথ্য অনুসারে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
সিপিএম ও বিজেপির দাবি নিয়ে চিকিৎসক তথা রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য বিশ্বরঞ্জন শতপথি এব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ‘যা জানানোর স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে জানানো হবে।’ এমনকী কতজনের মৃত্যুর নথি তাঁদের কাছে পৌঁছেছে তা বলতেও অস্বীকার করেন তিনি। এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া মেলে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও আধিকারিকের তরফেও।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় দাবি করেন, ‘এমআর বাঙুর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনায় মৃতদের ৪টি দেহ সৎকারের অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে। অথচ রাজ্য সরকার তা স্বীকার করছে না। সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, করোনায় মৃত্যু না হয়ে থাকলে দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না কেন?’
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইটে প্রশ্ন করেন, ‘রোগীর আত্মীয়রা বলছেন, এমআর বাঙুরের আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাঁদের স্বজনের দেহ পড়ে পড়ে পচছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার বলছে গত ৪৮ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় কারও মৃত্যুই হয়নি? তাহলে এই দেহগুলো কাদের? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী লুকানোর চেষ্টা করছেন?’
পরে মালব্য আরও লেখেন, ‘গত ৪৮ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় কোনও মৃত্যু হয়নি বলে দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। অথচ বাঁকুড়ায় গোপনে দেহ সৎকারের প্রতিবাদ করায় যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের ওপর লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। মনে রাখতে হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র, দু’টি দফতরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে।’