সিপিআইএমের বৈশিষ্ট্য ছিল জঙ্গি আন্দোলন করা। ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলায় সেভাবে আর দেখা যায়নি। ২০১১ সালে ক্ষমতা হারিয়ে বিরোধী আসনে লালপার্টি। তারপরও কোনও জঙ্গি আন্দোলন করতে দেখা যায়নি কমরেডদের। প্রধান বিরোধীদলের তকমাও ঘুচে গিয়েছে। তারপরও একই অবস্থা। ইয়ং ফ্রন্টকে নামিয়ে দিলেও জঙ্গি আন্দোলনের পরামর্শ তাঁরা দেননি। জনমত গঠন করার মতো কোনও আন্দোলন দেখা যায়নি। কেন এমন ঘটছে? এই প্রশ্নে পলিটব্যুরোর বৈঠকে বিড়ম্বনায় পড়ল বেঙ্গল লাইন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? সম্প্রতি বিজেপির নবান্ন অভিযান করেছে। সেটা সফল হোক বা বিফল হোক পরের প্রশ্ন। তারা কর্মসূচি তো নিয়েছে। এখন নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসেছে সিপিআইএম পলিটব্যুরো। সেখানে রাজ্য রাজনীতি এবং বঙ্গ সিপিআইএম নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষের বার্তাই উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর। এখানে পশ্চিমবঙ্গের নেতৃত্ব এবং কেরলের দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
কেন এমন প্রশ্ন উঠল? রাজ্য–রাজনীতিতে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যু তৈরি হয়েছে। এমনকী গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী থেকে নেতা। একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেখানে মানুষকে সংগঠিত করে জনমানসে ছাপ ফেলা বা জনমত গঠন করার মতো আন্দোলন গড়ে তোলা যাচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের মুখেই পড়তে হয়েছে আলিমুদ্দিনের কর্তাদের। নয়াদিল্লিতে পলিটব্যুরো বৈঠকে এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম–এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং বাংলার প্রতিনিধিরাও।
কী বলেছেন সীতারাম ইয়েচুরি? সম্প্রতি বামেদের কিছু প্রতিবাদ কর্মসূচি প্রভাব ফেলেছে রাজ্যে। বর্ধমানে কার্জন গেট চত্বরে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলন, কলেজ স্ট্রিটে এসএফআই–এর মিছিলও প্রভাব ফেলেছিল, হাওড়া আমতা থানা ঘেরাও এবং কলকাতা পুরসভা অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু গোটা রাজ্যজুড়ে বড় কর্মসূচি হয়নি। শুক্রবার সীতারাম ইয়েচুরি নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে সিবিআই এবং ইডির তৎপরতা নিয়ে বলেন, ‘এত বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে ইডিঁ–সিবিআই কেন চুপ ছিল? তাদের কাছে অনেকদিন ধরেই তথ্য প্রমাণ ছিল। এত বছর ধরে তারা কিছু করেনি। এটার মানে কী? অনেক গোপন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।’