বিরোধীরা বারবার অভিযোগ তুলেছে আবাস যোজনায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা–নেত্রীরা বাড়ি বানিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া বাংলা কেন্দ্রের দেওয়া টার্গেট পূরণ করতে পারবে না বলেও খোঁচা দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। এবার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেওয়া শর্ত মেনে লক্ষ্যপূরণ করল বাংলা। হাতে সময় ছিল মাত্র ৩৬ দিন। সব শর্ত মেনে যাচাই পর্ব শেষ করার পর ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিতে হতো ৩১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে। এবার সেই টার্গেট ছুঁয়ে ফেলল বাংলা। আবাস প্লাস যোজনার বরাদ্দের প্রায় ১০০ শতাংশ বাড়ি তৈরির অনুমোদন এত কম সময়ে দিয়ে কার্যত রেকর্ড গড়ল রাজ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
ঠিক কী তথ্য মিলেছে? প্রায় আট মাস আটকে রাখার পর ২৪ নভেম্বর আবাস প্লাস প্রকল্পে বাংলায় ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্র। এই কাজ সময়ে শেষ করা যথেষ্ট কঠিন ছিল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অফিসার থেকে কর্মীরা দিন–রাত কাজ করে এই টার্গেট ছুঁতে পেরেছে। কেন্দ্রের শর্ত মেনে ৩১ মার্চের মধ্যে সবক’টি বাড়ি তৈরির কাজও শেষ করতে পেরে এখন আত্মবিশ্বাসী রাজ্য সরকার বলে সূত্রের খবর।
কেমন করে লক্ষ্যপূরণ হল? নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রের ছাড়পত্র আসতেই কোমর বেঁধেছিল রাজ্য প্রশাসন। পঞ্চায়েত দফতর এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদ্বী। সেখানেই তৈরি হয়ে যায় রূপরেখা। জেলা প্রশাসনগুলির ‘পারফরম্যান্স’ পর্যালোচনা করে পিছিয়ে থাকা জেলাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছিল। ফলে বাড়ি তৈরির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে উঠে এল বাংলা। খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টেই এই চিত্র স্পষ্ট হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি এক লক্ষের অনুমোদন দেওয়ার কাজও শেষ হয়েছে রাত ১২টার মধ্যেই।
আর কী জানা যাচ্ছে? এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র পেয়েও প্রায় সাত লক্ষ বাড়ি তৈরির অনুমোদন এখনও দিতে পারেনি উত্তরপ্রদেশ। অসম এবং গুজরাটের অবস্থাও অনেকটা একই। উত্তরপ্রদেশে এখনও ৬.৪২ লক্ষ বাড়ির অনুমোদন দেওয়া বাকি। অসমে ৬.০৭ লক্ষ, ওড়িশায় ৪.১৪ লক্ষ এবং গুজরাটে ২ লক্ষ বাড়ির অনুমোদন দেওয়া যায়নি। অথচ বাংলা নভেম্বরের শেষে কাজ শুরু করে ১০০ শতাংশ অনুমোদন দিতে পেরেছে। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র বাংলার জন্য বাড়ি তৈরির টাকা না ছাড়লেও দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।