
বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ হেনস্থার শিকার বাঙালি, অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়
১ মিনিটে পড়ুন . Updated: 23 Mar 2021, 10:07 AM IST- বিষয়টি নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ও থানা-পুলিশ অবধি গড়িয়েছে।
বাংলা ভাষায় কথা বলা যাবে না! এমনকী বাংলা ভাষায় কথা বলাকে ‘অপরাধে’ হিসাবে ধরে নিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হল এক বাঙালি ব্যবসায়ীকে, বলে অভিযোগ। এই ঘটনা ঘটেছে বড়বাজার এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ও থানা-পুলিশ অবধি গড়িয়েছে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখতে শুরু করেছেন অনেকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় মিছিল করে সামাজিক সংগঠন বাংলা পক্ষ। বাঙালি বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে তাঁরা সোচ্চার হন। এমনকী পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। রীতিমতো অভিযোগ জমা পড়েছে বলে খবর।
ঠিক কী হয়েছিল বড়বাজারে? স্থানীয় সূত্রে খবর, যাদবপুরের বাসিন্দা রোহিত মজুমদার গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মনোহর দাস কাটরায় যান ব্যবসায়িক কাজে। তাঁর কথায়, ‘সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। দোকান খোলা আছে কি না, তা দেখার জন্য আমি রাস্তা থেকেই ওই বাড়ির অন্দরে উঁকি দিই। আমার হাতে তখন একটি সিগারেট ছিল। এক অবাঙালি ব্যক্তি আমার কাছে জানতে চান, আমি কিসের খোঁজ করছি। আমি আমার প্রয়োজনের কথা বললে, তিনি আমাকে ভেতরে আসতে বলেন। আমি সিগারেটটি নিয়ে সেখানে ঢুকি। এরপর আমাকে আরও এক অবাঙালি ব্যক্তি আচমকাই গালিগালাজ করতে থাকেন ধূমপানের অপরাধে। আমি তাঁদের বলি, হাতে সিগারেট থাকলেও আমি ভেতরে ঢুকে সেটায় টান দিইনি। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে আসিনি, আমাকে আসতে বলা হয়েছে। কিন্তু কে শোনে কার কার কথা! গালিগালাজের মাত্রা চরমে পৌঁছয় এবং বাঙালি হওয়ার কারণে আমাকে চরম অপমান করা হয়। তারপর আমাকে ওই আবাসনের কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে হেনস্তা করা হয়। আমার কাছে ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। অবাঙালি ব্যক্তিরা আমার সঙ্গে এমন হিন্দিতে কথা বলতে থাকেন, যা আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমি তাঁদের বাংলায় কথা বলার জন্য অনুরোধ করি। তাতে অপমানের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আমার কাছ থেকে ২০০ টাকা জরিমানা নেওয়া হয়। যেহেতু বাংলায় কথা বলছি, তাই আমাকে ‘বাংলাদেশি’ তকমাও দেওয়া হয়।’
এই পরিস্থিতিতে রাতেই বড়বাজার থানায় গিয়ে গোটা বিষয়টি জানান রোহিতবাবু। পুলিশ তখন ওই জরিমানার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় মিছিল করে বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষের প্রধান কৌশিক মাইতি বলেন, ‘বড়বাজার থানার পুলিশ সহযোগিতা করেছে এবং এফআইআর নিয়েছে। সেখান থেকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। কলকাতা শহরে বাংলা বলার অপরাধে যদি একজন বাঙালিকে হেনস্থা শিকার হতে হয়, তার চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।’