এবার মজার ঘটনা ঘটল আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে। এখানে এদিন কোনও ভর্ৎসনার ঘটনা ঘটেনি। গত শনিবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে আচমকা হাসির রোল ওঠে। আর সেটা আইনজীবীরা জানতে গেলে তাঁরাও হেসে ফেলেন। তবে অনেকের চোখ কপালেও ওঠে। কারণ সিবিআইয়ের পেশ করা কেস ডায়েরিতে বাংলায় লেখা বানান ভুল রয়েছে। এমনকী এই ঘটনায় বিচারক সেটা এজলাসে বসে আইনজীবী থেকে শুরু করে তদন্তকারী অফিসারকে পর্যন্ত ডেকে দেখালেন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? আদালত সূত্রে খবর, তখন চলছিল ধৃত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার শুনানি। সিবিআই তাঁকে আদালতে এনে জেল হেফাজতের আবেদন করেছে। আর তখনই তদন্তের অগ্রগতি বুঝে নেওয়ার জন্য বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় কেস ডায়েরি চান সিবিআইয়ের কাছে। সেটা হাতে পেতেই পড়তে থাকেন তিনি। আর মন দিয়ে কেস ডায়েরি খুটিয়ে দেখতেই তাঁর চোখ কপালে ওঠে। কারণ ছত্রে ছত্রে বানান ভুল লেখা হয়েছে কেস ডায়েরিতে। আর এমন বানান দেখে বিচারক নিজেই হাসতে শুরু করেন। তারপর তদন্তকারী অফিসারকে ডাকেন তিনি। কেস ডায়েরি দেখিয়ে তদন্তকারী অফিসারকে জিজ্ঞাসা করলেন, এই লেখাটা কি আপনার? এই প্রশ্ন করতেই প্রথমে আদালত চত্বরে পিন পড়ার নীরবতা তৈরি হয়। তখন তদন্তকারী অফিসার ঢোঁক গিলে বললেন, ওটা সিবিআইয়ের একজন অফিসারই লিখেছেন। আর তারপরই উঠল হাসির রোল।
ঠিক কী বললেন বিচারক? এরপরই বিচারক কেস ডায়েরির দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতেই বলেন, ‘লেখাটায় খুব বানান ভুল। প্রত্যেকটা শব্দে বানান ভুল রয়েছে’। আবার তদন্তকারী অফিসারকে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘সত্যি বলুন তো, লেখাটা আপনার নয় তো?’ অফিসার বলেন, ‘না স্যার। আমি লিখিনি।’ তখন আরও হাসতে থাকেন উপস্থিত আইনজীবীরা। আসলে সিবিআইয়ের কেস ডায়েরিতে বানান ভুল থাকতে পারে এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।
কী লেখা ছিল ওখানে? সিবিআই সূত্রের খবর, জীবনের হেফাজত থেকে পাওয়া মোবাইল ফোন থেকে ১০০ অডিয়ো ফাইল উদ্ধার হয়েছে। সেই নথিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সিবিআই। তাই অডিয়ো ফাইলগুলি শুনে নিয়ে গোটা কথোপকথন বাংলায় লেখা হয়েছে। তারপর কেস ডায়েরির সঙ্গে রেখেছে সিবিআই। বাংলায় সেই লেখা লিখতে গিয়েই ছত্রে ছত্রে বানান ভুল লেখা হয়েছে। ভুল বাংলা বানান চোখ এড়িয়ে যায়নি বিচারকের। কোনও এক অবাঙালি অফিসারই ওই লেখা লিখেছিলেন বলে সূত্রের খবর।