বামফ্রন্ট সরকারের জমানার ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড তাঁরা বাতিল করছেন। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা জানান। খাদ্য বাজেটের উপর আলোচনার শেষ পর্বে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বক্তব্য শেষ হতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেশন ব্যবস্থা ছাড়াও খাদ্য–কৃষি বিষয়ে রাজ্য সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। এখানেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, কেন অন্য কয়েকটি রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গ পোস্ত চাষ করার অধিকার পাবে না? তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকেও দায়ী করেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? বাংলার মানুষ পোস্ত খেতে ভালবাসেন সেটা বিলক্ষণ জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পোস্ত না হলে আমাদের চলে না। কিন্তু মাত্র চারটি রাজ্যের পোস্ত চাষ করার অনুমতি আছে। অন্য রাজ্য চাষ করার অনুমতি পেলে, পশ্চিমবঙ্গ কেন পাবে না?’ তারপরই বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাও তো পোস্ত খান। কেন্দ্রকে এই ব্যাপারে লিখুন না। কিছু ক্ষেত্রে যে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সব পোস্ত থেকে ড্রাগ হয় না।’ সরকারি সূত্রে খবর, রাজ্যে পোস্ত চাষের অনুমতি চেয়ে গত ৩ মার্চ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আর কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? তিনি নিজেও চিঠি লিখেছেন বলে এদিন জানিয়েছেন। আর বিধানসভায় তিনি বলেন, ‘রাজ্যে কৃষকরা খুব ভাল আছে। তাঁদের আয় আগের তুলনায় চারগুণ বেড়েছে। আলুর দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন। রাজ্য সরকার তাই সাড়ে ৬ টাকা কেজি দরে আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে দাম বাড়লে ওই মজুত আলু ব্যবহার করা হবে। রাজ্যে মাছ ও ডিমের উৎপাদন বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। এখানে প্রচুর ইলিশ হচ্ছে। মাছে এখন আমরা সাবলম্বী। পেঁয়াজের চাহিদার ৪০ শতাংশ রাজ্যের উৎপাদন দিয়ে মেটানো হচ্ছে।’
আর কী জানা যাচ্ছে? রেশন ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য রাজ্য সরকার অনেক কিছু করলেও, কেন্দ্র যে এখনও যে রাজ্যকে বঞ্চিত করছে, সেটাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার নিজের খরচে প্রায় ৩ কোটি রেশন গ্রাহককে খাদ্য সরবরাহ করে। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা দেওয়া উচিত। এখানেই মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমাকে কেউ ‘পলিটিক্যাল গবেট’ ভাবতে পারেন। আমার কিছু করার নেই। গণতন্ত্রে সবাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, তার কোনও মানে নেই। এখন ভাল চাল দেওয়া হয়। আগে এফসিআই বালি, কাঁকর মেশানো চাল দিত।’