জোড়া সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, বিভিন্ন শিল্পনীতি, বড় অঙ্কের লগ্নি- অনেক আশা জুগিয়ে আজ থেকে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস) শুরু হচ্ছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে অষ্টম বিজিবিএস চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এবার ৪০টি দেশের প্রায় ২০০ জন বিদেশি অতিথি যোগ দিচ্ছেন বিজিবিএসে। ২০টি দেশ হল 'পার্টনার'। তাছাড়াও ২৬টি দেশের রাষ্ট্রদূত বা তাঁদের সমতুল্য প্রতিনিধিরা বিজিবিএসে যোগ দেবেন। এর আগে যে সাতটি বিজিবিএসের সম্মেলন হয়েছে, তাতে এতজন বিদেশি প্রতিনিধি যোগ দেননি।
আর শুধু বিদেশি প্রতিনিধিরা নন, দেশ ও রাজ্যের প্রথমসারির শিল্পপতিরাও যোগ দেবেন বিজিবিএসে। সূত্রের খবর, গতবারের মতো এবারও বিজিবিএসে হাজির থাকবেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি, জেএসডব্লু গ্রুপের চেয়ারম্যান সজ্জন জিন্দল, আরপিএসজি গ্রুপের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, টিটাগড় রেল সিস্টেমস লিমিটেডের ভাইস-চেয়ারম্যান উমেশ চৌধুরীরা উপস্থিত থাকবেন। সবমিলিয়ে রাজ্য সরকার আশা করছে যে এবারের সম্মেলন থেকে বড় অঙ্কের লগ্নির প্রস্তাব আসবে পশ্চিমবঙ্গে।
বিজিবিএসে কোন কোন বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হবে?
১) ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি-সহ উৎপাদন ক্ষেত্র।
২) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য।
৩) পর্যটন।
৪) স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো।
৫) তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র।
৬) সৃজনশীল অর্থনীতি।
৭) শিক্ষা।
৮) বিদ্যুৎ (অচিরাচরিত শক্তির দিকে বাড়তি নজর)।
জোড়া সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন মমতার
বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে দক্ষিণবঙ্গে দুটি সেতুর ভিস্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, মুড়িগঙ্গার উপরে গঙ্গাসাগর সেতু এবং দামোদর নদের উপরে শিল্পসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। দুটি সেতুই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমূল পালটে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার রূপরেখা।
ইতিমধ্যে গঙ্গাসাগর সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। প্রায় ১৩ একর জমি কেনার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। কচুবেড়িয়ার দিকে পাঁচ একরের মতো জমি কিনছে রাজ্য। কাকদ্বীপের দিকে কিনছে প্রায় আট একর জমি। পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রিজ তৈরি করতে ১,৫০০ কোটি টাকার মতো খরচ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। চার লেনের সেতুর ফলে সাগর এলাকার মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন।
অন্যদিকে বর্ধমানে দামোদর নদের উপরে শিল্পসেতু তৈরি করা হবে। আসলে দামোদরের উপরে এখন কৃষক সেতু আছে। কিন্তু সেটার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বিকল্প হিসেবে পুরনো ব্রিজের পাশেই নয়া শিল্পসেতু দড়ে তোলা হচ্ছে। যে ব্রিজটা দেখতে অনেকটা বিদ্যাসাগর সেতুর (দ্বিতীয় হুগলি সেতু) মতো হবে। শিল্পসেতুর দৈর্ঘ্য মোট ৬৪০ মিটার। খরচ পড়বে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।
বিজিবিএস থেকে আরও কী কী ঘোষণা করা হতে পারে?
১) বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে সেমিকন্ডাক্টর নীতির ঘোষণা করা হতে পারে।
২) প্রতিরক্ষা নির্মাণ সংক্রান্ত নীতিরও ঘোষণা করা হতে পারে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে।
৩) পশ্চিমবঙ্গে একগুচ্ছ নয়া হোটেল নিয়ে মউ স্বাক্ষর করা হতে পারে।
৪) নিউ টাউনে মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করা হতে পারে।
৫) সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, স্টার্ট-আপ, গ্লোবাল কেপেবিলিটি সেন্টার (জিসিসি), চর্মশিল্প, বস্ত্রশিল্পের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রেও নীতি ঘোষণা করতে পারে রাজ্য সরকার।