পশ্চিমবঙ্গে সাপ্তাহিক দুই দিনের লকডাউনের ফলে অতিমারী মোকাবিলায় সুবিধা হবে প্রশাসনের, এমনই মনে করছে রাজ্যের চিকিৎসক মহল।
করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে রাজ্যে দুই দিনের লকডাউন আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে সার্জিক্যাল অংকোলজিস্ট দীপ্তেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, ‘সপ্তাহে দুই দিন লকডাউন জারির ফলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছুটা সুবিধা পাবে সরকার।’
সেই সঙ্গে বাংলার বেশ কিছু অঞ্চলে গোষ্ঠী সংক্রমণ দেখা দিয়েছে বলেও স্বীকার করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে তার জন্য মূলত জনতার লকডাউন বিধি ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভ্যাসকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের কথায়, ‘কিছু কিছু অঞ্চল, যেখানে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে গোষ্ঠী সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তা বলে গোটা রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে, এমন বলা যায় না। আমাদের সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলা সংক্রমণের কার্ভ সমান করার চেষ্টা করতে হবে। গণনার ভিত্তিতেই লকডাউন নীতি তৈরি করা হয়েছে।’
তাঁর যুক্তি, ‘যদি বৃহস্পতি ও শনিবার লকডাউন জারি করা হয়, সে ক্ষেত্রে মাঝে শুক্রবার মানুষের বিশেষ কিছু করার থাকবে না। রবিবার সাধারণত কর্মহীন হয়। ফলে নতুন লকডাউন বিধি সপ্তাহে কার্যত দুই দিনের বেশিই আরোপিত হচ্ছে। আগামী সপ্তাহগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু থাকলে চিকিৎসা ক্ষেত্রের উপরে কিছুটা চাপ কমবে।’
চিকিরসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, গত কয়েক মাসে মানুষ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার ফলেই সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বহু করোনা আক্রান্তের পরিবার তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করতে দেননি। অনেকে কোয়ারেন্টাইন বিধিও ভেঙেছেন। গোষ্ঠী সংক্রমণের পিছনে এগুলি বড় কারণ।’
সাম্প্রতিক সপ্তাহে দুই দিনের লকডাউন বিধিও অনেকে অমান্য করবেন বলেই ধারণা শ্যামাশিসবাবুর। তিনি বলেন, ‘আমা মনে হয়, এখনও অনেকেই সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের তাৎপর্য বুঝতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে নতুন লকডাউন বিধিও কতটা গুরুত্ব পাবে, আমার সন্দেহ রয়েছে।’
উল্লেখ্য, সোমবার রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে যে, এবার সপ্তাহে দুই দিন রাজ্যজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন আরোপ হবে। এই দিনই ২৪ ঘণ্টায় ২,২৮২ নতুন সংক্রমণের জেরে পশ্চিমবঙ্গে মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪,৭৬৯ জন।