কলকাতা লাগোয়া বিধাননগর। সেখানেই বসতে চলেছে মেলা। যার পোশাকি নাম - বিধাননগর মেলা উৎসব ২০২৪-২৫। সেই মেলায় বেশ কিছু বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, আপাতত তেমনটা আর হচ্ছে না। উদ্য়োক্তাদের তরফে তাঁদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এপার বাংলার এই মেলায় যোগ দিতে আসার দরকার নেই। তাঁর যে অগ্রিম টাকা দিয়েছিলেন, সেই অর্থ তাঁদের ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তজুড়ে এখন শুধুই অশান্তির ছায়া। যে ভারতের প্রত্যক্ষ সাহায্যে বাংলাদেশ গঠিত হয়েছিল, এখন সেই ভারতকেই বিদ্বেষ আর ঘৃণায় ভরিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা। তাতে যোগ্য মদত দিচ্ছে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশের মাটিতে উঠছে ভারতবিরোধী স্লোগান, চরম অবমাননা করা হয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকারও। এই প্রেক্ষাপটে এপার বাংলার আমজনতার মধ্যেও বাংলাদেশ নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে।
এদিকে, বিধাননগর মেলায় দোকান দেওয়ার জন্য আগেভাগেই স্টল এবং প্যাভিলিয়ন 'বুক' করে রেখেছিলেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু, যে সংস্থা এই পুরো বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে, তাদের তরফে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশি ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
ওই ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে, তাঁদের বিধাননগর মেলায় আসার প্রয়োজন নেই। সেইসঙ্গে, ওই ব্যবসায়ীদের জমা করা টাকাও ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট তদারকি সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে মঙ্গলবারই এই মেলার উদ্বোধন করা হবে। মেলার উদ্যোক্তা বিধাননগর পুরনিগম। মেলা চলবে আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবছর এই মেলায় প্রায় ৫০০টি স্টল থাকবে।
যে সংস্থাকে এই মেলায় স্টল বুকিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে,'মেলায় যদি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত থাকেন, তাহলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আমরা চাই না, মেলা ঘিরে কোনও অশান্তি ছড়াক। আমরা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জমা করা অগ্রিম টাকা ইতিমধ্যেই ফেরত দিতে শুরু করেছি। বাকি যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও যাতে নিজেদের টাকা ফেরত নিয়ে নেন, আমরা তাঁদের সেটা বোঝানোর চেষ্টা করছি। এবং তাঁদের বলেছি, মেলায় আসার কোনও প্রয়োজন নেই।'
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলাও শুরু হতে চলেছে। সেখানেও বাংলাদেশের কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না বলেই জানা গিয়েছে। যা এককথায় নজিরবিহীন।
কারণ, প্রতিবছরই কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের তরফে বেশ কয়েকটি স্টল দেওয়া হয়। সেসব স্টলে ক্রেতা ও বইপ্রেমীদের ভিড়ও হয় চোখে পড়ার মতো। এবার আর সেই চেনা ছবি দেখা যাবে না।
অন্যদিকে, বিধাননগর মেলায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মূলত তাঁদের দেশের শাড়ির সম্ভার নিয়ে বসেন। ঢাকাই, জামদানি, বিভিন্ন ধরনের বাংলাদেশি তাঁত এপার বাংলার মহিলাদের বরাবরই ভীষণ প্রিয়। ফলে বিকিকিনি ভালোই হয়। কিন্তু, এবার সেটাও হবে না।