অশান্তি দেখা দিল বিধাননগর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে। মঙ্গলবার বিধাননগর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ‘অশান্তি’ চরমে উঠল। আগের বৈঠকে কার্যবিবরণী তৈরি হয়েছিল। সেই কার্যবিবরণী থেকে কেন আলোচ্য বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে? জোর গলায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী এই প্রশ্নকে সামনে রেখে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তকে রীতিমতো চেপে ধরা হয়। টেবিল চাপড়ে সেটা আবার অনেকে সমর্থনও করেন। এই আবহে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের আগেই মাঝপথে বৈঠক বন্ধ করে বেরিয়ে যান চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
সূত্রের খবর, বিধাননগর পুরসভার অন্দরে তৃণমূল কংগ্রেসের দু’টি লবি কাজ করে। এই লবির বিবাদ থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিধাননগরে বিজেপির প্রার্থী হন সব্যসাচী দত্ত। তখন মন্ত্রী সুজিত বসুর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। ফলপ্রকাশের পরে সব্যসাচী দত্ত তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল ভোটে জিতলেও বিধাননগর বিধানসভায় লিড পায় বিজেপি। এটা নিয়ে পুরসভা এবং মেয়রের সমালোচনা করেছিলেন চেয়ারম্যান। তবে সুজিত বসুর লবির লোকজনই সব্যসাচীকে চেপে ধরেন।
আরও পড়ুন: ছটপুজোর প্রাক্কালে আগুন বাজারদর, কাঁচালঙ্কা সেঞ্চুরি করেছে, বাকি সবজির দাম কত?
বিধাননগর পুরসভা সূত্রে খবর, গত বোর্ড মিটিংয়ে বিধাননগর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রসেনজিৎ নাগ চেয়ারম্যানের কী ক্ষমতা, কী কী কাজ করতে পারেন, কী করতে পারেন না সেসব তুলে ধরেন। এমনকী চেয়ারম্যান আইনবিরুদ্ধ কাজ করছেন বলেও অভিযোগ তোলেন প্রসেনজিৎবাবু। প্রসেনজিতের সেই বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সেই কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষরও করেছিলেন সব্যসাচী দত্ত। তখন থেকেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায় পৌঁছয় যে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম হস্তক্ষেপ করেন। কিন্তু তারপরও পুরসভার অন্দরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ অব্যাহতই রয়েছে।
এই দুই গোষ্ঠীর বিবাদেই অশান্তি চরমে উঠেছিল। যা তাতিয়ে তোলে চেয়ারম্যানকে। অথচ এই বৈঠকে যাতে কোনও অশান্তি না হয় তার জন্য বার্তাও দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু তারপরও অশান্তি চরমে উঠল। চিৎকার, আঙুল উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি এবং টেবিল চাপড়ে কথা বলা হয় চেয়ারম্যানের সামনেই বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই প্রসেনজিৎবাবু কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া অংশের বিষয়টি উত্থাপন করেন। সব্যসাচী দত্তের থেকে তিনি জবাব চান। তখন টেবিল চাপড়ে প্রসেনজিৎ নাগকে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর সমর্থন করেন। তখনই পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বৈঠক মুলতুবি করে বেরিয়ে যান সব্যসাচী দত্ত। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।