চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ে ধরা। এই প্রবাদের উপর ভর করেই একের পর এক গাড়ি লুঠ করছিল বান্টি–দম্পতি। আর এই গাড়ি লুঠ করতে দুর্গাপুজোকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এত কাঠখড় পুড়িয়েও শেষ রক্ষা হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়ল শহরের এই বান্টি–দম্পতি। এটা কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য নয়। বাস্তবেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে এই দম্পতি বলে অভিযোগ। তাই উত্তর কলকাতার অভিযুক্ত দম্পতি বান্টি রঞ্জিত এবং কাজল রামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঠিক কী করেছিল তারা? পুলিশ সূত্রে খবর, দারুণ পরিকল্পনা তৈরি করেছিল এই দম্পতি। আর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সপ্তমীর জনজোয়ারে রাত দেড়টা নাগাদ এই দম্পতি দমদম স্টেশন চত্বরে একটি অ্যাপ ক্যাবে চড়ে। ক্যাবটি নেওয়া হয়েছিল অফলাইনে। চালককে বলা হয়, তারা সল্টলেক ও উত্তর কলকাতার কয়েকটি বিখ্যাত পুজো দেখবে। সেই মতো গাড়ি চলতে শুরু করে। এডি ব্লকের নির্জন জায়গায় ঢুকে চালককে ব্যাপক মারধর করা হয়। চালকের নাম বির্জু যাদব। তাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। তারপর রাস্তায় ফেলে রেখে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় বান্টি দম্পতি।
মারধর খেয়ে আক্রান্ত চালক জ্ঞান ফিরলে স্থানীয়দের বিষয়টি জানায়। তাঁদের সাহায্য পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। বিধাননগর (উত্তর) পুলিশ এই ঘটনায় চমকে যায়। শহরের বুকে এমন ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে? প্রশ্ন জাগে তাঁদের মনে। তখন তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা শুরু করে। সেখানে এই বান্টি–দম্পতির ছবি পেলেও পুলিশ বিশ্বাস করতে পারেনি। কিন্তু খোঁজখবর করে জানতে পারে এই দম্পতিই ঘটাচ্ছে একের পর এক ঘটনা। তখন বান্টিকে কাশীপুরের ঘোষপাড়া অঞ্চল থেকে আর কাজলকে বরানগরের কালীমাতা কলোনি থেকে গ্রেফতার হয়।
কিভাবে জানল কলকাতা পুলিশ? জানা গিয়েছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শহরে তিনটি পৃথক গাড়ি লুঠের ঘটনা ঘটে। কিন্তু কোনও যোগসূত্রে মিলছিল না। কারণ ঘটনার ভিন্নতা ছিল। একই কায়দায় লুঠ হচ্ছিল না গাড়ি। কখনও চালককে মাদক খাইয়ে গাড়ি লুঠ, কখনও মারধর করে গাড়ি লুঠ করা হচ্ছিল। অবশেষে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বারবার একই ছবি হাতে আসায় গ্রেফতার করা হয় বান্টি–দম্পতিকে।