রাজ্য সম্মেলনে রাজ্য কমিটি খেরে সরে দাঁড়িয়েছেন বিমান বসু। তবে তিনি এখনও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান রয়েছেন। এই স্মেলন পর্বের পর তিনি দলের অন্দরে জানিয়েছেন, আর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান থাকতে চান না তিনি। বয়সসীমার গেরোয় দলের রাজ্য নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়া অশীতিপর ‘তরুণ’ বিমান বসু এবার বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান পদও ছেড়ে দিতে চান বলে সূত্রের খবর। এখন প্রশ্ন, তিনি যদি এই পদে না থাকতে চান তাহলে পরবর্তী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান কে হবেন? এই পরিস্থিতিতে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার জন্য সিপিআইএমের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসুকে অনুরোধ করলেন শরিক নেতারা। তাঁদের মতে, এখন কঠিন পরিস্থিতি। তাই বিমানবাবুর অভিজ্ঞতা ও কুশলতার বিকল্প এখনও কারও মধ্যে নেই। তাই তিনি থাকুন।
দলীয় সূত্রে খবর, বিমানবাবুর বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান থাকার বিষয়টি আগামী মাসে অনুষ্ঠিত দলের পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত নিশ্চিতভাবেই ঝুলে থাকবে। যদিও তিনি থাকতে চান না বলে সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাতদের এবার সরাসরি জানিয়েও দিয়েছেন। আজ, শনিবার বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকের খবর দিতে শরিক নেতাদের ফোন করেছিলেন বিমানবাবুই। সেখানেই একাধিক শরিক নেতা বিমানবাবুকে বলেন, বয়স হয়েছে বলে তাঁকে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে এটা তাঁরা কেউই এমন চান না।
এদিকে পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সিপিআইএমের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় কমিটির কোনও পদে না থাকলে তাঁকে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান রাখা কার্যত কঠিন। কারণ, পার্টির রাজ্য কমিটি বা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে অংশ না নেওয়া কোনও নেতার পক্ষে কখনও বামফ্রন্টের আলোচনায় কোনও ইস্যুতে নিজের দলের অবস্থান বা মতামত ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরো থেকেও বিমান বসুর সরে যাওয়ার কথা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শরিক নেতা বলেন, ‘মতপার্থক্য অনেক ক্ষেত্রেই হয়েছে। কিন্তু বামফ্রন্টে বিমানদা অভিভাবকের মতো।’
তাহলে কে হবেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান? বামফ্রন্টের শরিক দলগুলি এখনও যে করেই হোক বিমানবাবুকে এই পদে দেখতে চায়। সেক্ষেত্রে সদ্য বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর নাম প্রস্তাব করতে পারেন অনেকে। কারণ, বয়সসীমার নিরিখে বিমানবাবু না পারলেও সূর্যকান্ত মিশ্র দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আরও কয়েক বছর থাকতে পারবেন। এই বিষয়ে সিপিআইএমের নতুন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় থেকে জেলা কমিটি পর্যন্ত এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাঁরা অব্যাহতি নিলেন, তাঁরা কমিটি থেকে সরে গিয়েছেন, পার্টি থেকে নয়। বিমানদা, সূর্যদা’র মতো নেতাদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা অবশ্যই দলের কাজে লাগানো হবে।’