কোথাও কোনও স্লোগান নেই। উচ্চস্বরে প্রতিবাদ নেই। মুখে মুখোশ। হাতে প্রতিবাদে প্লাকার্ড, ফেস্টুন। আরজিকরে নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের জন্মদিনে ফের পথে নামল নাগরিক সমাজ। কলকাতার রাজপথে ফের প্রতিবাদ মিছিল। তবে এবার মৌন প্রতিবাদ। ‘দ্রোহের অক্ষরে লেখা থাক মৃত্যুর উর্ধে জন্মের ইতিহাস’
৯ ফেব্রুয়ারি ওই তরুণী চিকিৎসকের জন্মদিন। এই দিন বাড়িতে আনন্দ হওয়ার কথা। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন নির্যাতিতার বাবা মা। মেধাবী মেয়ে একের পর এক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল আরজি করের সেমিনার হলে। সেই ঘটনায় ইতিমধ্য়েই সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি এখনও বিচার মেলেনি। সেকারণে ফের প্রতিবাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য় হলাম।
তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, কালই মাধ্য়মিক পরীক্ষা। সেকারণে সরব কোনও আন্দোলন আমরা করতে চাইনি। নীরবে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। মৌন মিছিল করা হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলেন, বাংলার মেয়ের জন্মদিন আজ। সেই জন্মদিনে পথে নেমেছি আমরা। একাধিক প্রশ্নের উত্তর পাইনি আমরা। সেকারণেই নির্যাতিতার বিচার চেয়ে মিছিল।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। বিবেকানন্দর বাড়ির সামনে থেকে এই মিছিলে শামিল হন নির্যাতিতার বাবা মা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ফের এই মিছিলে দেখা গেল প্রচুর সাধারণ মানুষকে। তাঁরাও এই মিছিলে যোগ দেন।
শিলিগুড়ি, মেদিনীপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে এই প্রতিবাদ মিছিল বের হয়।
নির্যাতিতার মা সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন, বলতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমার হাতে গুড়ের পায়েস খেতে খুব ভালোবাসত। আমি করে দিতাম। ওর জন্মদিন পালন হত কর্মস্থলে। সারাদিন রোগী দেখার পরে কেক কেটে জন্মদিন পালন করা হত। বাবা একটা কেক এনে রাখত। আমি একটা জামা এনে রাখতাম। গত বছর ২২ হাজার টাকা দিয়ে একটা ঘড়ি কিনেছিলাম। দিন দুয়েক পরেছিল। সেই ঘড়িটা পরার মানুষটাই আর নেই। আর কোনও দিন তাকে ফিরে পাব না। যতদিন আমরা বেঁচে থাকব, ও আর কোনও দিন ফিরে আসব না। নলেন গুড়ের পায়েস খেতে খুব ভালোবাসত। আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশ্বাস পেয়েছি।
নির্যাতিতার বাবা বলেন, বিচারের জন্য লড়ছি, লড়ব। ৬ মাস, ৬ বছর, ৬০ বছর ধরে লড়ব। ৬ মাস পূর্ণ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ সঙ্গে আছেন আমরা বিচার পাব।