রাজ্যে সাপে–নেউলের মতো সম্পর্ক বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসের। রাজ্য–রাজনীতির অলিন্দে এই ছবিটাই দেখে আসছে বাংলা। সেখানে এবার খোদ বিধানসভায় ব্যতিক্রমী ছবি দেখা গেল। শাসক–বিরোধী এই প্রথম কোনও বিষয়ে সহমত পোষণ করল। আর তাতেই খেলা জমে ক্ষীর। এবার বাংলার দাবি নিয়ে শাসক–বিরোধীর প্রতিনিধিদল যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আজ, মঙ্গলবার নদী ভাঙন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব বিধানসভায় পেশ করেন পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই প্রস্তাবে সমর্থন জানান বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। আর তখনই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শাসক–বিরোধীরা একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নদীর ভাঙনের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাতে যাবে।
তবে এই সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত নয়। বিধানসভার অন্দরে আপাতত ঐক্যমতে আসা গিয়েছে ঠিকই। তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। কারণ তিনি বিরোধী দলনেতা। আর তৃণমূল কংগ্রেসের কোন কোন বিধায়ক প্রতিনিধি হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন সেটা ঠিক করার দায়িত্ব অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের নাম জানাবেন মনোজ টিগ্গা।
এদিকে নদী ভাঙন নিয়ে জেলায় জেলায় বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সাহায্য করবে বলে আগেই তিনি জানিয়েছিলেন। আর কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রস্তাব দিয়েছেন, নদী ভাঙন নিয়ে যখন প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন তখন যেন পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের বিষয়টিও উত্থাপন করা হয়।
অন্যদিকে মালদা–সহ দুই দিনাজপুরে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। রবিবারই আলিপুরদুয়ারে গিয়ে নদী ভাঙন দেখে এসেছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপির বিধায়করা মানুষের কথা ভাবেন না। বিজেপিও পাল্টা অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু এবার অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ পাশে সরিয়ে বাংলার উন্নয়নে শাসক–বিরোধী একমঞ্চে আসে কিনা সেটাই দেখার।