লোকসভা নির্বাচনে আসন সংখ্যা কমে হয়েছে ১২। তখন ভগবানগোলা এবং বরাহনগর বিধানসভার উপনির্বাচনে দুটিতেই পরাজিত হতে হয়েছিল। তারপর চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও বাংলায় ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। আজ, বুধবার ভবিষ্য়তের পথ চলার পরিকল্পনা ঠিক করতে হাইভোল্টেজ বৈঠকে বসছে বঙ্গ–বিজেপি। কিন্তু তার আগে পরাজিত প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন। সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ইডি–সিবিআই দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে জেতা সম্ভব নয়। জিততে হলে লাগবে সংগঠন। আর রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন রাহুল সিনহা, তথাগত রায়, সায়ন্তন বসু।
হাতে খুব বেশি সময় নেই। ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে আরও ৬টি বিধানসভার উপনির্বাচন রয়েছে। সংগঠন মজবুত না করতে পারলে এবার যেমন ৪–০ ফলাফল হয়েছে তেমন ৬–০ ফলাফল হবে। তারপর বিধানসভা নির্বাচনে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে। তাই আজকের বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তবে বৈঠকের আগেই বিজেপির অন্দরের ক্ষোভের ঢেউ বাইরে আছড়ে পড়ছে। বিজেপি নেতারাই রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
আরও পড়ুন: শাহজাহানের ভাই–জামাই–গাড়িচালককে নোটিশ, জিজ্ঞসাবাদের জন্য তলব করল ইডি
লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের অনেকগুলি কারণ থাকলেও সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই বড় করে দেখছেন বিজেপি নেতারা। সেই কথা উঠে এসেছে শমীক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে সুকান্ত মজুমদারের গলায়। আর এই ব্যাপক পরাজয় নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘দল মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেনি। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি পৌঁছে দেওয়া যায়নি মানুষের কাছে। তৃণমূল কংগ্রেস কিন্তু নিজেদের ভাল কাজগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছে। বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতিবাচক দিকগুলিও মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারেনি।’ এখন যা পরিস্থিতি তাতে বিজেপির যে পাঁচজন পর্যবেক্ষক বাংলার জন্য আছেন তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
দিলীপ ঘোষকে সমস্ত দিক থেকে সাইড করে দিয়ে আখেরে বঙ্গ–বিজেপির ক্ষতি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। যা আজকের বৈঠকে উঠবে বলে সূত্রের খবর। যদিও তথাগত রায় পছন্দ করেন না দিলীপ ঘোষকে। প্রাক্তন রাজ্য় সভাপতি তথাগত রায় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে সুর চড়িয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘ভুল প্রার্থী নির্বাচন। ঘুষ খেয়ে দলের বিরুদ্ধে কাজ করা। টাকা পয়সা সরানো এবং দল কামিনী কাঞ্চন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারেনি। তাই ভরাডুবি।’ গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারকের অভিযোগ, ‘আরামবাগ লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। আমাদের লোকেরা তখন কী করছিল?’ ভোটের কাজে তাঁকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন সায়ন্তন বসুও।