সংগঠনের অবস্থা এখনও ঢিলেঢালা। সদস্যসংগ্রহ অভিযানে সময় বাড়িয়েও লক্ষ্যপূরণ হয়নি। তার উপর আবার জল মেশানো রিপোর্ট বারবার গিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার পর বিধায়ক সংখ্যা যেমন কমছে তেমন একের পর এক নির্বাচনে গোহারা হতে শুরু করেছে বিজেপি। ফলে পদ্ম চাষ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই আবহে বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের এবার পরীক্ষা নেবেন সুনীল বনসল। অনেকে রসিকতা করে বলছেন ‘বনসল স্যার’। সুতরাং এখন দুয়ারে পরীক্ষা। আর সিলেবাস বা হোমওয়ার্ক আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রে অজানা নয় বিষয়গুলি। কিন্তু ‘পরীক্ষার্থীদের’ প্রস্তুতি কতদূর? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সাংসদ সংখ্যা পৌঁছেছিল ১৮। এবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১২’তে। পুরসভা, পঞ্চায়েত, উপনির্বাচন সর্বত্র শুধুই পরাজয়। কারণ বুথস্তরে সংগঠন তৈরি করতে না পারলে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন। তাই আগামী ২০ জানুয়ারি বঙ্গ–বিজেপি নেতাদের পরীক্ষায় বসতে হবে। বঙ্গ–বিজেপির সাংগঠনিক নেতাদের পরীক্ষা নেবেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। সেখানে সংগঠন নিয়েই নানা প্রশ্ন থাকবে। আর তার জবাব দিতে না পারলে যেতে হবে পিছনের সারিতে।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে আবার ‘দুয়ারে সরকার’, নবান্ন থেকে জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি
২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেখানে আবার উঠে পড়ে লাগতে চাইছে বিজেপি। আর এই শীত–ঘুম কাটাতে হাজির হচ্ছেন সুনীল বনসল। বাংলায় ৯০ হাজারের মতো বুথ আছে। দ্রুত প্রত্যেকটি বুথ এলাকায় সাংগঠনিক কমিটি তৈরি করাই বিজেপির লক্ষ্য। কারণ নিচুতলায় দলের সংগঠন মজবুত করতে না পারলে আসন জেতা সম্ভব নয়। এমনিতেই বড় কোনও কাজ পশ্চিমবঙ্গে নেই বিজেপির। সেখানে কটা কমিটি তৈরি হয়েছে তা জানতে চাইবেন সুনীল বনসল। হাতে সময় বেশি নেই। আজ ১৬ তারিখ হয়ে গেল। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় আছে। সুনীল বনসল নির্দেশ দিয়েছেন, ওই তারিখের মধ্যে রাজ্যের প্রত্যেকটি বুথে কমিটি গড়ে ফেলতে হবে। ২০ তারিখ তিনি কলকাতায় এসে পরীক্ষা নেবেন বলে সূত্রের খবর।
বুথ কমিটি কী হয়ে গিয়েছে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, ১৯ জানুয়ারির মধ্যে ৯০ হাজার বুথ কমিটি গড়ে তোলা অসম্ভব। ২০ হাজার বুথেও বিজেপির কমিটি তৈরি হবে না বলে সন্দিহান সবপক্ষই। দলের এক আদি নেতা বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো জেলাগুলির একটি বুথেও কমিটি তৈরি করা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। রাজ্যের ২০ হাজারের বেশি বুথে কমিটি গড়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি এখন নেই।’ সেক্ষেত্রে পরীক্ষার ফলাফল কেমন হবে তা বোঝাই যাচ্ছে। সুনীল বনসলের ধমক কপালে জুটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই বঙ্গ–বিজেপির নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আরও কিছু সময় চেয়ে নেওয়া হবে। এটাই একমাত্র বাঁচার রাস্তা। এমনই খবর এসেছে সূত্রে।