একুশের নির্বাচন থেকে শুনতে হয়েছে বিজেপি বহিরাগত। তারা বাঙালি সেন্টিমেন্ট বোঝে না। এমনকী তারা বাংলার দল নয়। একুশের নির্বাচনে বিজেপি পরাজিত হয়। একাধিক উপনির্বাচনেও এই প্রচার হয় এবং হারের মুখ দেখে বিজেপি। কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে গো–হারা হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল। বিজেপি নেতারা বারবার হিন্দিভাষী প্রার্থী দেওয়ায় সত্যিই আম বাঙালি তা সমর্থন করেনি। এবার তাই ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ সেন্টিমেন্টকে ছুঁতে চাইছে বিজেপি।
ঠিক কী ঘটেছে বিজেপিতে? সূত্রের খবর, সোমবার রাজ্য পার্টির নবগঠিত কমিটি ও সভাপতিদের বৈঠকে আমিষ পদ পরিবেশন করেছে পদ্ম শিবির। যেখানে স্বয়ং হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় সংগঠন সম্পাদক বিএল সন্তোষ। একুশের নির্বাচনের সময় দেখা গিয়েছিল একাধিকবার রাজ্যে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিরামিষ আহার করেছেন। তাও আবার বাঙালি, আদিবাসীদের বাড়িতে। সেখানে এবার যেন ভোলবদল হল তাদের। সুকান্ত মজুমদারের সভাপতিত্বে বঙ্গ–বিজেপির প্রথম রাজ্য কমিটির বৈঠকের মধ্যাহ্নভোজে রাখা হল আমিষ পদ! ছিল ফিসফ্রাই থেকে মাছের কালিয়ার মতো বিভিন্ন পদ।
একুশের নির্বাচনে বিজেপিকে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গিয়েছে বাঙালির দল নয় বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে এবার বাঙালি হওয়ার চেষ্টা করা হল বলে মনে করছেন অনেক বিজেপি নেতাই। এভাবে নয়া পথ ধরে সাফল্য আসে কিনা এখন সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন অনেকেই। এই ভাবনা স্বয়ং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বলে দলীয় সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, উত্তর ভারতের বাচনভঙ্গী, গুটকা সংস্কৃতি, লাল চুল, কর্মী–সমর্থকদের ‘কারিওকর্তা’, নিরামিষ আচার—সবমিলিয়ে বাঙালি সংস্কৃতি থেকে বহুদূরে ছিল গেরুয়া বাহিনী। এবার এই মাছে ভাতে বাঙালি হতে চাওয়া নিয়ে দলের অন্দরেই ঝড় উঠেছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপির রাজ্য নেতা বলেন, ‘নিজেদের ‘বাঙালি’ হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া হচ্ছেন তাঁরা। ধাক্বা খেয়ে শিখল বঙ্গ বিজেপি। বাংলায় দল করতে গেলে বাঙালি হয়ে উঠতে হবে। তাদের সংস্কৃতি, মানসিকতার সঙ্গে মানাতে হবে। তাই নিরামিষ খাবার বাদ দিয়ে মেনুতে নতুন সংযোজন হল ফ্রিসফ্রাই–সহ মাছের বিভিন্ন পদ।’