রেশন দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকার ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করল বিজেপি। শনিবার রীতিমতো খাদ্যমন্ত্রীকে ‘অপদার্থ’ বলে তাঁর পদত্যাগ দাবি করলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। পালটা ত্রাণের নামে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সরব হলে জ্যোতিপ্রিয়বাবু।
চলতি মাসের শুরুতে রেশনে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিলি শুরু হতেই পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মানুষ। অভিযোগ, পরিমানে কম সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে রেশন দোকান থেকে। বিভিন্ন জায়গায় রেশন তুলতে উপচে পড়ে ভিড়। যা সরাতে লাঠিও চালাতে হয়েছে পুলিশকে। এমনকী বিভিন্ন জায়গায় রেশনের চাল তৃণমূল নেতারা বিলি করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। যার ফলে তাঁরা মানুষকে সঠিক পরিমানে চাল দিতে পারছেন না বলে জানান রেশন ডিলাররা। এমনকী খোদ খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৃণমূল নেতারা রেশন ডিলারদের কাছ থেকে চাল লুঠ করছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
এই নিয়ে গত কয়েকদিন বারবার দলীয় নেতাদের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট বলেছেন, রেশন দোকান থেকে সামগ্রী নিয়ে ত্রাণ বিলি চলবে না। ত্রাণ বিলি করতে গেলে তা করতে হবে নিজের গ্যাঁটের কড়ি খসিয়ে। তবে তাতেও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি বলে অভিযোগ।
এই নিয়েই শনিবার মুখ খোলেন রাহুলবাবু। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘রেশন ব্যাবস্থায় চরম দুর্নীতি, ব্যাপক দলবাজি চলছে। মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র বিবৃতি দিয়ে এর দায় এড়াতে পারবেন না। অবিলম্বে অযোগ্য, অপদার্থ, দুর্নীতিগ্রস্ত খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বরখাস্ত করতে হবে। তাঁর খাদ্যমন্ত্রীর পদে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই।‘
একই ঝাঁঝে পালটা দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের থেকে ছিটেফোঁটা চালও রাজ্যে ঢোকেনি। বাংলার মানুষকে প্রতারণা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিবকে জিজ্ঞাসা করুক। ও একটা মিথ্যেবাদী, ধাপ্পাবাজ, প্রবঞ্চক। জীবনে জনপ্রতিনিধি ব্যাপারটা তো বুঝতে পারেনি। কী করে জনপ্রতিনিধি হতে হয় জানে না। জীবনে তো পঞ্চায়েতেরও মেম্বার হতে পারেনি।‘
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ৬ মাস পশ্চিমবঙ্গ সরকার রেশনে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের কথা ঘোষণা করেছে। রেশনে বিনামূল্যে মিলবে চাল ও আটা। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে রেশন বণ্টনের নামে দুর্নীতির অভিযোগ আসছে। অভিযোগ, মাপ মতো সামগ্রী পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।