স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
প্রত্যাশামতোই অমিত শাহের বক্তব্যের পালটা হামলা চালাল তৃণমূল। মঙ্গলবার বিজেপির ভার্চুয়াল জনসভা থেকে অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাতের ডাক দেন। পালটা সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির বিরুদ্ধে সংকটের সময় রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, একদিকে করোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা, তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবকে উপেক্ষা করে শুধু ভোটবাক্সে নজর বিজেপির।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তৃমমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়ান ছাড়াও হাজির ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও রাজ্যসভার সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী।
সঙ্গে এদিন অমিত শাহের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে মিথ্যাভাষণের অভিযোগ তুলেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল। ফের CAA প্রসঙ্গ তোলাতেও শাহের সমালোচনা করেছে তারা।
তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ করোনা ও আমফান মোকাবিলা। কিন্তু অমিত শাহ CAA প্রসঙ্গ তোলায় জবাব দেওয়া দরকারি হয়ে পড়েছে। ছ’মাসের মধ্যে CAA-র বিধি জারি করতে হত। তার আর মাত্র কয়েক সপ্তাহই বাকি। ফলে এরা আরও ৬ মাস সময়সীমা বাড়াবে। তার ফলে বিষয়টি নিয়ে ফের আগামী ডিসেম্বরে শোরগোল শুরু হবে। তার থেকে মাত্র কয়েক মাস পরেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন।’
পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে শাহের অভিযোগের পালটা ডেরেক এদিন বলেন, ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিহারে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ২৮ গুণ বেশি, মহারাষ্ট্রে ১৬ গুণ বেশি, হরিয়ানায় ৭ গুণ বেশি ও মধ্যপ্রদেশে ৪ গুণ বেশি।’
বেকারত্বের অভিযোগ নিয়েও জবাব দেন ডেরেক। বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে দেশে বেকারত্বের হার ২৩.৫ শতাংশ। হরিয়ানায় ৩৫ শতাংশ। মধ্য প্রদেশে ২৭ শতাংশ। উত্তর প্রদেশে ২১ শতাংশ ও কর্ণাটকে ২০.৪ শতাংশ। সেখানে পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার ১৭.৪ শতাংশ।’
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বলেন, ‘একে তো কেন্দ্র সাধারণ মানুষের হাতে টাকা দিচ্ছে না। তার ওপর রাজ্যের বকেয়া ৫৩,০০০ কোটি টাকা দেওয়ারও নাম করছে না তারা।’
আয়ুষ্মান ভারত নিয়েও শাহকে বিঁধেছে তৃণমূল। অমিত মিত্র বলেন, ‘২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রকল্প নকল করে ২০১৮ সালে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্র। রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ৭.৫ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।’
মঙ্গলবারের জনসভায় পশ্চিমবঙ্গে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু না করায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তুমুল সমালোচনা করেন। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে গরিব মানুষের অধিকারের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা বিনামূল্যে পেতে পারে গরিব পরিবারগুলি। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিমার সর্বোচ্চ রাশি বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা।