আজ শনিবার বাংলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে। ঠিক তার আগে রাজ্য–রাজনীতিতে বঙ্গ–বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করলেন তিনি। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল নেতা রাহুল গান্ধীর থেকেও বলে মনে করেন দিলীপ ঘোষ। সরাসরি এই কথা বলেছেন তিনি। এমনকী এই নিয়ে যে বিতর্ক তুঙ্গে উঠবে সেটা বুঝতে পেরে ড্যামেজ কন্ট্রোলও করার চেষ্টা করেছেন দিলীপ ঘোষ। যার জবাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর কংগ্রেস বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে খুব চটেছে।
ইতিমধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপমুখ্যমন্ত্রী করার পক্ষে সওয়াল করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ। এমনকী তাঁকে পুলিশমন্ত্রী করার দাবিও উঠেছে। এই আবহে বিজেপির পোড়খাওয়া নেতা দিলীপ ঘোষের প্রশংসা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু সেটা বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের কাছে অস্বস্তির। আর সেটাই সুকৌশলে খেলে দিলেন দিলীপ ঘোষ। কারণ এই বঙ্গ–বিজেপির নেতারাই ক্রমাগত কান–ভাঙানি দিয়ে তাঁকে সাইড করে দিয়েছেন। এমনটাই মনে করেন দিলীপ ঘোষ। সে কথা আগেও বারবার বলেছেন। সেখানে দিলীপ ঘোষের গলায় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের প্রশংসা এবং তাও আবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তুলনা টেনে। এটাই অস্বস্তির।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীতে বিজেপি নেতাদের সভাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার, নিরাপত্তারক্ষী–পড়ুয়াদের হাতাহাতি
রাহুল গান্ধী এখন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেস ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছে। বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ধাক্কা দিয়েছে। আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের রেকর্ডই ভেঙে বিপুল ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস এখন বিরোধীদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম দল। সেখানে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা মনে করি। রাহুল গান্ধী ৩০–৪০টা ভোট হেরেছেন। তিনি রিজেক্ট হয়ে গিয়েছেন একপ্রকার। তাঁর কথাবার্তার থেকে অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত বলে মনে হয় আমার। নেতৃত্বে মানুষ স্বীকার করবে কিনা, পার্টি স্বীকার করে নেওয়া এক কথা। সময়ের স্বীকার করা অন্য কথা।’
এই মন্তব্যের পর বঙ্গ–বিজেপির অনেক নেতারই বোলতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দিলীপ ঘোষ এখন রাহুল গান্ধীর বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। আর এই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, ‘ঠিকই বলেছেন। দিলীপবাবুর মেধা, তাঁর বুদ্ধিমত্তা। গরুর দুধে যিনি সোনা খুঁজে পান। তিনি কার মাথা থেকে কীরকম ব্রেনের ঘিলু খুঁজে পাবেন, তিনিই বিচার করবেন।’ তবে দিলীপ ঘোষ ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টাও করেছেন। তাঁর কথায়, ‘অভিষেক কাজ করছেন। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। পারিবারিক পার্টির নেতা। পোলট্রি ফার্মে তৈরি করা নেতা। রাস্তায় লড়াই করে তো নেতা হননি। যখন পার্টি দায়িত্ব দেবেন, সামনে আসবেন, পরীক্ষা হবে। তখন মূল্যায়ন হবে। এখন তো গাছের ছায়ায় আছেন।’ কুণাল ঘোষের পাল্টা জবাব, ‘দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দলেই যে একটা চক্রান্তমূলক বিষয় ঘটেছে। তাই হতাশা বা বিরক্তি থাকার যথেষ্ট কারণ আছে। আমি অনুরোধ করব, আপনি অন্য দল করুন। কিন্তু হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে।’