বিজেপিতে তাঁকে কোণঠাসা করা হয়েছিল। একের পর এক পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এমনকী জেতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে সরিয়ে অন্য কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছিল। তারপর লোকসভা নির্বাচনে হেরে যান তিনি। রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। একদা বঙ্গ–বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ছিলেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি দিলীপ ঘোষ। এখন একের পর এক কর্মসূচি তাঁকে দেওয়া হচ্ছে। তাতে উচ্ছ্বসিত দিলীপ ঘোষের অনুগামীরা। তাঁদের আশা ‘দিলীপ দা’ আবার পদে ফিরছেন। তবে দিলীপ ঘোষকে এখনও কোন পদ দেওয়া হয়নি। যদিও খুব শীঘ্রই ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলে সূত্রের খবর।
লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গ–বিজেপির ব্যাপক ভরাডুবি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভাবিয়ে তুলেছে। আর মিলিয়ে দেখা গিয়েছে, দিলীপ ঘোষ এতদিন যে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দিয়ে ছিলেন সেটাই সঠিক। সংগঠন একেবারে ভেঙে পড়েছে। দলের ভিতরেও এই কথা বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু সেসবে কেউ পাত্তা দেননি। ফলাফল বলছে, দিলীপ ঘোষের রিপোর্ট সঠিক। তাই তাঁকে আবার ফিরিয়ে আনা হোক। যদিও এখনও পর্যন্ত দিলীপের পরবর্তী দায়িত্ব সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। এখন জেলায় জেলায় সফর করেছেন দিলীপ ঘোষ। তাই সংগঠন আবার দিলীপ ঘোষের হাতে আসতে চলেছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: আবার জেলা সফর শুরু করছেন মুখ্যমন্ত্রী, লোকসভা নির্বাচনের পর প্রথম ঝাড়গ্রামে
এদিকে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে ডাক পান দিলীপ ঘোষ। গত ১৭ জুলাই ছিল সেই বৈঠক। যা সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে হয়। কর্মসমিতির বৈঠকের দিনও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি হিসাবে মঞ্চে বসার সুযোগ পান। আর দিলীপ ঘোষের নাম ঘোষণা হতেই করতালির ঝড় ওঠে। দিলীপের নামে স্লোগান দেন অনেকে। দিলীপের সঙ্গে সেলফি তোলেন অনেকে। তাতে স্পষ্ট হয় দিলীপ ঘোষ নেতা–কর্মীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তারপর থেকে বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুর, যাদবপুর, মথুরাপুরে রাজ্য পার্টির পক্ষ থেকে পাঠানো হয় দিলীপ ঘোষকে। বিজেপিতে এসেই রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক এবং পরে রাজ্য সভাপতি হন দিলীপ। এমনকী প্রথমে বিধায়ক ও পরে সাংসদ হন। ২০১৯ সালে ১৮টি আসন আসে লোকসভা নির্বাচনে। আর ৭৭টি আসন আসে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে।
অন্যদিকে বিজেপি দিলীপকে সরিয়ে রাজ্য সভাপতি করে সুকান্ত মজুমদারকে। দিলীপ হন সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি। কিন্তু সুকান্তের সঙ্গে সংঘাতের আবহ তৈরি হয় দিলীপের। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘দিলীপদা দলের সম্পদ। সুকান্ত–শুভেন্দু–দিলীপ ত্রয়ী একসঙ্গে আন্দোলন করলে দলের অগ্রগতি নিশ্চিত। কিন্তু দিলীপদাকে নিয়ে বাকিরা চলতে পারবেন কি না সেটাই ভাবনার।’ বাংলায় দলকে বাঁচাতে ওই পদেই দিলীপকে ফেরানো উচিত বলে মনে করেন অনুগামীরা। একদিন আগেই সাংসদদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সেই দিন বেশি দূর নেই যেদিন বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। তারপরই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে গুঞ্জন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।