একুশের নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকেই বেআব্রু হয়ে পড়ছে বিজেপির সাংগঠনিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ধীরে ধীরে সাংসদ–বিধায়ক থেকে নেতা–কর্মীরা দল ছাড়তে শুরু করেছেন। বেসুরো গাইছেন কয়েকজন। যার মধ্যে প্রথমসারিতে রয়েছেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ফের সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন তিনি। এদিন রাজীব বলেন, ‘ভবানীপুরে প্রার্থী না দিয়ে বিজেপি সৌজন্য দেখাতে পারত। প্রার্থী দিলেও ভবানীপুরে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ এই মন্তব্য বিজেপির অন্দরে ব্যাপক অস্বস্তি তৈরি করেছে।
এখন নতুন রাজ্য সভাপতি নিয়ে এসে সব বিষয়গুলি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল বিজেপি। এমনকী প্রতিটি জায়গায় গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে এই পদক্ষেপ করেছিল বিজেপি। সেখানে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য অস্বস্তিই বাড়িয়েছে। কারণ নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এখন ভবানীপুরে প্রচারে নেমেছেন। তখনই এমন মন্তব্য বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে।
আজ শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও নতুন করে ক্ষোভ উগরে দেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘তিনি অনেক বড় মাপের নেতা কিছু বলব না। কিন্তু, যাঁকে দেখে বাংলার মানুষ ২১৩টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসকে জিতিয়েছে, তাঁকে ভোটের সময় যে সমস্ত সম্বোধন করা হয়েছিল, তা ঠিক নয়। আর আমি তখন এটারই প্রতিবাদ করেছিলাম।’ সুতরাং নাম না করে শুভেন্দুর দিকেই তির তাক করলেন রাজীব বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন। আর শুভেন্দু কী বলেছিলেন তা সবারই মনে আছে।
ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে। যিনি এন্টালিতে একুশের নির্বাচনে বিপুল ভোটে হেরেছিলেন। এই নিয়ে এবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘জয়ী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রে প্রার্থী না দিয়ে সৌজন্য দেখাতে পারত বিজেপি।’ সুতরাং নির্বাচন হওয়ার আগেই ফলাফল ঘোষণা করে দিলেন বিজেপি নেতা রাজীব। যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে ভোটবাক্সে বলে মনে করছেন দলের অনেকেই। তাই এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এখন আর রাজীবকে কোনও কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় না। তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বাড়িতে যেতেও দেখা গিয়েছে। আগেও একাধিকবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। শুভেন্দুকে নিশানা করেছিলেন। এবার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতবে ঘোষণা করে দেওয়ায় তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি।