তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে শক্তিশালী বিরোধী কণ্ঠস্বর শুনতে চান বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তার জন্য প্রয়োজনে তৃণমূল কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের 'ভালো' নেতানেত্রীদের মানুষের ভোট দিয়ে নির্বাচন করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই রাজনীতি, গণতন্ত্র ও সুপ্রশাসন সম্পর্কে নিজের অবস্থান ও নীতি ব্যাখ্যা করেছেন রূপা।
প্রসঙ্গত, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় যে শুধুমাত্র বিজেপির সাংগঠনিক নেত্রী, তাই নয়। তিনি দলের তরফে সাংসদের দায়িত্বও সামলেছেন। তাই দলীয় বা সাংগঠনিক রাজনীতির পাশাপাশি সংসদীয় রাজনীতি এবং জনপ্রতিনিধি হিসাবে প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব সম্পর্কেও রূপা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল।
টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একটি বিষয় স্পষ্ট করে দেন রূপা। বুঝিয়ে দেন, তিনি মোটেও একদলীয় শাসনব্যবস্থা বা রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। কারণ, কোনও সুস্থ গণতন্ত্রেই সেটা কাম্য নয়।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বামেরা শূন্য হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের অবস্থাও তথৈবচ। এটা রূপার পছন্দ নয়। যদিও তিনি বিশ্বাস করেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হবে এবং বাংলায় সরকার গড়বে।
কিন্তু, সেই সরকারের জমানায় শক্তপোক্ত বিরোধী প্রতিনিধিত্ব থাকার পক্ষে সওয়াল করেছেন রূপা। আর সেটা করতে গিয়েই তিনি বলেন, যদি কোথাও বিজেপি ভালো প্রার্থী না দেয়, এবং সেই একই জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বেশি ভালো হয়, তাহলে গণতন্ত্রের স্বার্থে সেই কেন্দ্রে ঘাসফুলের প্রার্থীকেই ভোট দেওয়া উচিত।
এমনকী, তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রবীণ নেতা অমিত মিত্র ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করেছেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর আক্ষেপ, অমিত-শোভনদেবের মতো ভালো মানুষরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। তাঁদের নিজস্ব জায়গা থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রূপা যে এই বিষয়গুলি পছন্দ করেন না, সেটা রাখঢাক না করেই বলেছেন তিনি। তাঁর মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি যদি বাংলায় সরকার তৈরি করে, তাহলেও বিরোধী শিবিরের সব মিলিয়ে অন্তত ২০ জন বলিষ্ঠ বিধায়ক থাকা দরকার। তা না হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ হবে।
এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে রাজ্যের বর্তমান সরকারের সমালোচনাও করেন রূপা। তাঁর দাবি, একমাত্র বাংলাতেই বিরোধী কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকী, অতীতে কেবলমাত্র বিরোধী দলের সাংসদ হওয়াতেই নাকি বাংলার সরকার তাঁকে তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ করতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন রূপা।