কদিন আগেই সংগঠন নিয়ে ধমক খেয়েছিলেন বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৫০টি আসন পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সতীশ ধন্দ। এবার সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি নিয়ে ‘নিষ্ক্রিয়’ বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে ধমক দিলেন বঙ্গ–বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল বলে সূত্রের খবর। তাঁর এই ধমকের পরই বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার বিজেপির রাজ্য দফতরে এই বৈঠকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী থেকে সহকারী সংগঠন সম্পাদক সতীশ ধনদ সকলেই ছিলেন। সেখানেই আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই বিধায়কদের সদস্য সংগ্রহের কাজে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোনও নির্বাচনে বিজেপি বিধায়করা সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে আসন জেতাতে পারছেন না বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অভিযোগ। আবার সংগঠনও গড়ে তুলতে পারছে না। এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া সদস্য সংগ্রহের টার্গেটও স্পর্শ করতে পারছেন না বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। বিধানসভাতেও বিরাট কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি বিজেপি পরিষদীয় দল। তার সঙ্গে আবার পার্টির এবং পরিষদীয় দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব সামনে এসেছে। জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে জেলার বিধায়কদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে। বিধায়করা এলাকায় সংগঠনের কাজে সময় দেন না বলে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল ধমক দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: দিঘায় জগন্নাথ মন্দির নিয়ে কটাক্ষ শুভেন্দুর, পাল্টা জোরলো খোঁচা দিলেন কুণালও
এই আবহে এখন বিধায়করা পাল্টা দাবি তুলেছেন যে, তাঁরা সব বিষয়ে সুনীল বনশলের সঙ্গে বৈঠক করতে চান। অথচ দলের বিধায়কদের কাঠগড়ায় তুলেছেন সুনীল বনশল। সদস্য সংগ্রহের পারফরম্যান্সে সাংসদদের ভূমিকা নিয়েও সুর চড়িয়ে একাধিক সাংসদকে ভর্ৎসনা করেছেন তিনি। এই আবহে বিধায়কদের মাঠে নামাতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বঙ্গ–বিজেপির বিধায়কদের নিয়ে পৃথক বৈঠক করলেন। শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, বঙ্কিম ঘোষ, বিশাল লামা বিশ্বনাথ কারক–সহ আরও কয়েকজন বিধায়করা সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তবে সুনীস বনশলের সঙ্গে বিধায়কদের বৈঠকের সম্ভাবনা ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে। তবে তার আগে সুনীল বনসলের সঙ্গে বৈঠক করবেন শুভেন্দু বলে সূত্রের খবর।
লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে থাকায় সদস্য সংগ্রহের সময় বঙ্গ–বিজেপির জন্য বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু থেকেই সাড়া পাচ্ছিলেন না বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। কেউ সদস্য সংগ্রহ করতে চাইছেন না। প্রত্যেক জেলায় ছবিটা একই। আর তা অ্যাপে দেখতে পেয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। মানুষের সঙ্গে যদি যোগাযোগই না থাকে তাহলে ভোটে আসন জেতা কার্যত অসম্ভব। এটা বুঝতে পেরেই ধমক দিয়েছেন সুনীল বনসল বলে সূত্রের খবর। এমনকী বঙ্গ–বিজেপির সংগঠনের যে হাঁড়ির হাল তা নিয়েও তিনি নয়াদিল্লিকে রিপোর্ট দিয়েছেন। হাতে বেশি সময় নেই। আর ১৫ মাস পরই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে রানাঘাট থেকে শুরু করে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কাঁথি, নদিয়া সর্বত্রই খারাপ পারফরম্যান্স উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।