বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় জিতেছেন। এটা সবাই দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু ভোটের অঙ্ক বলছে, বিজেপিকে হারিয়েছে সিপিআইএম। কারণ দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। শুধু উঠে এসেছে তা নয়, রীতিমতো ভোটের ব্যবধান বাড়িয়ে ম্যাজিক দেখিয়েছেন তিনি। আর সেখানে ভোট কমে গিয়েছে বিজেপির। তাই প্রশ্ন উঠছে, বিজেপিকে কী রাজনৈতিক প্রত্যাখ্যান করলেন মানুষ? সিপিআইএম কী রাজ্য–রাজনীতিতে বিরোধী মুখ হয়ে উঠছে?
ফলাফলের দিকে তাকালে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে। বাবুল সুপ্রিয় মোট ভোট পেয়েছেন—৫০ হাজার ৭২২। সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম পেয়েছেন ৩০ হাজার ৮১৮ ভোট। আর বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৬৭। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সিপিআইএম প্রার্থী পরাজিত করেছেন বিজেপি প্রার্থীকে। সুতরাং অঙ্ক বলছে, ১৮ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপিকে পিছিয়ে দিয়েছেন সিপিআইএম প্রার্থী। যা আলিমুদ্দিনের রক্তক্ষরণ আটকানোর বার্তা দিচ্ছে।
অতীতের অঙ্ক কী বলছে? একুশের নির্বাচনে সিপিআইএমের প্রার্থী হয়েছিলেন ডাঃ ফুয়াদ হালিম। তিনি সায়রা শাহ হালিমের স্বামী। তখন তিনি পেয়েছিলেন ৮ হাজার ৪৭৪ ভোট। আর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জয়ের ব্যবধান ছিল ৭৫ হাজার ৩৫৯ ভোট। সুতরাং দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কমলেও বেড়েছে সিপিআইএমের ভোট। বিজেপি কার্যত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। একুশের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ৩১ হাজার ২২৬ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। আর দ্বিতীয় স্থানে ছিল।
কেন সেখান থেকে তলানিতে বিজেপি? এক, বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ভোটররাই বিজেপিকে ভোট দেয়নি। দুই, বিজেপির ভোট সরাসরি ট্রান্সফার হয়েছে সিপিআইএমে। তিন, এখানে বিজেপির আদি– নব্যের বিরোধ থেকেই ভোটব্যাঙ্ক ট্রান্সফার হয়েছে। চার, ভোট অন্যান্যবারের থেকে কম পড়েছে। বিজেপির একটা অংশ ভোট দেয়নি। পাঁচ, বিজেপির ভোটার বা কর্মী–সমর্থকরা ভোট দিয়েছে সিপিআইএম প্রার্থীকে। ছয়, তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট এখানে ভাগ হয়নি। সাত, এখানের ভোটার যাঁরা অবাঙালি তাঁরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। আট, সংখ্যালঘু ভোট এখানে দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে। একটা অংশ গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসে। আর একটা অংশ গিয়েছে সিপিআইএমে। সবমিলিয়ে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।