বাংলাদেশে এখন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হিন্দুদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে। আর তার জেরে ওপার বাংলার মানুষজন এপার বাংলায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করার পর পদ্মাপারের দেশে আতঙ্কের বাতাবরণ। এই ঘটনার বিরোধিতা করে চলেছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় ব্যাপক প্রতিবাদ হচ্ছে। আজ, বুধবার বিধানসভার বাইরে এই ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। কড়া জবাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও।
বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার চান, এই দেশের সমস্ত মুসলিমকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমি আর্জি জানাব যাতে সব মুসলিমদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর বাংলাদেশের সব হিন্দুদের এদেশে নিয়ে আসা হয়। অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে গেলে এনআরসি অত্যন্ত প্রয়োজন। সারা ভারতে এটি কার্যকর করতেই হবে। বাংলাদেশে যদি হিন্দুদের সঙ্গে থাকতে মুসলিমদের অসুবিধা হয় তাহলে ভারত সরকারের উচিত হিন্দুদের এদেশে নিয়ে আসা। আর এখানের মুসলিমদের ওপারে পাঠিয়ে দেওয়া।’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে হবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বিল আনছে রাজ্য সরকার
এই মন্তব্য নিয়ে এখন ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ ধর্ম ও জাতির ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা উচিত নয়। সেটা সংবিধানে আছে। কিন্তু বিজেপির মূল অ্যাজেন্ডা হিন্দুত্ব। হিন্দু রাষ্ট্র করে তোলার কথা বিজেপি নেতা–মন্ত্রীদের মুখে শোনা যায়। এখন গোটা দেশে ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক। তার মধ্যেই ভারতের মুসলিমদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার মন্তব্য করে বিজেপি বিধায়ক বিতর্কের সৃষ্টি করলেন। বিজেপি বিধায়কের দাবি, ‘কমপক্ষে ১৭ হাজার মৌলবী এদেশে কাজ করছেন। বাংলাদেশ থেকে উগ্রপন্থীদের এখানে পাঠাচ্ছে। তারা আবার দেশের নানা রাজ্যে লাভ–জিহাদ ছড়াচ্ছে।’
বিজেপির মধ্যেও কিছু নেতা–মন্ত্রী আছেন যাঁরা মুসলিম সম্প্রদায়ের। তাঁরা এখনও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মেয়রের কড়া কথায়, ‘অসীম সরকারের বাবার দেশ নয় ভারতবর্ষ। কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই এসব করতে পারে না। কারণ সংবিধানে তা বলা নেই। যে দেশই হোক সব জায়গায় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব সংখ্যাগুরুদের। আর বাংলাদেশে যা হচ্ছে তার প্রতিবাদ বাংলাও করছে। যা ঘটছে তা লজ্জাজনক। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। সেখানে এখন কোনও সরকারই নেই। আর মহম্মদ ইউনুসের ক্ষমতা নেই কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার।’