বিজেপি যে ভয়টা পাচ্ছিল সেটাই বাস্তবে রূপায়িত হল। শুক্রবার মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাই আজ অধিবেশনের হট–টপিক ছিল। যা বেলাশেষে উল্কার মতো আছড়ে পড়ল অধিবেশন কক্ষে। আর তাঁর নাম ঘোষণা হতেই বিধানসভায় হট্টগোল শুরু করে দেয় বিজেপি। এমনকী বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপির বিধায়করা। বহুদিন ধরেই কে পিএসি চেয়ারম্যান হবেন তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। আর সব জল্পনাকে পিছনে ফেলে অনুপস্থিত থেকেও বাজিমাত করলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়।
এই ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য রাজ্যপালকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী মামলা করার পথেও হেঁটেছিলেন। কিন্তু আইনের ফাঁক গলেই মুকুল রায় হয়ে গেলেন পিএসি চেয়ারম্যান। কারণ তিনি এখনও বিজেপির বিধায়কই রয়েছেন। আবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সুবাদে তিনি হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। এখানেই শেষ নয়, বিরোধী বেঞ্চে বসে শাসক দলের হয়ে সওয়াল বেশ টানটান বিষয় হয়ে দাঁড়ায় বিধানসভায়। বিজেপি এই বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিছুদিন আগে বলেছিলেন, মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করা হলে কিছুই করার নেই। তবে দেখার বিধানসভার অধ্যক্ষ কি সিদ্ধান্ত নেন।
আর আজ বিজেপির যে কিছুই করার নেই তা প্রমাণ হয়ে গেল বিধানসভায়। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল থেকেই পিএসি চেয়ারম্যান হন। সেই ঐতিহ্যকে ভাঙলেন অধ্যক্ষ। বিজেপির কোনও সদস্য বা সদস্যা মুকুল রায়ের নাম প্রস্তাব করেনি। তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীর উপস্থিতিতে তিনি ওই দলে যোগ দিয়েছেন। সেই অডিও–ভিডিও সবাই দেখেছেন। আমাদের অশোক লাহিড়ীর নাম পাঠিয়েছিলেন মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। সেটা প্রত্যাখ্যাত করা হয়েছে। এই সরকার চায় খরচ আমরা করব, হিসাব আমরা দেখব। এই সরকার জিটিএ’র অডিট করেনি। খেলা–মেলায় টাকা খরচে বিরোধীরা যাতে বাধা না হতে পারে তাই এই সিদ্ধান্ত। সরকারের ভুলগুলি যাতে ধরতে না পারা যায়, তাই মুকুল রায়কে মনোনীত করা হল।’