অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ভাঁড়িয়ে তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যার তদন্ত করছে শেক্সপিয়ার সরণি থানা। এই অভিযোগের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে কোচবিহারের বিজেপি বিধায়কের নাম। তাতে রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। যদিও বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে এই অভিযোগ মানতে নারাজ। যে তিনজন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে তাঁদেরকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। তাহলে বিধায়কের প্যাড, স্ট্যাপ কেমন করে গেল ধৃতদের কাছে? উঠছে প্রশ্ন। আর এই প্রশ্নের উত্তর জানতেই ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হল বিজেপি বিধায়ককে। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের নাম করে টাকা তোলার চেষ্টা এবং বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে’র প্যাডে লেখা চিঠি দিয়ে বিধায়ক আবাস বুকিং করার তদন্ত করছে পুলিশ। তার জেরেই শনিবার শেক্সপিয়র সরণি থানায় ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হল বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে’কে। টানা তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের এই বিজেপি বিধায়ককে। পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে বিজেপি বিধায়ক স্বীকার করেছেন, কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাসের ঘর বুক করতে দুষ্কৃতী দলটি যে সুপারিশপত্র জমা দিয়েছিল সেখানে থাকা সই এবং রাবার স্ট্যাম্প তাঁর নিজের। ওই প্যাডের পাতাও তাঁরই। কিন্তু প্যাডের পাতায় যে সুপারিশ লেখা হয়েছে সেটি তাঁর লেখা নয়। সেটা আসলে জাল।
আরও পড়ুন: একশো দিনের কাজে বাড়ল না বরাদ্দ, নির্মলা সীতারামনের বাজেটে হতাশ গ্রামীণ মানুষ
বিজেপি বিধায়ক এই তথ্য দেওয়ার পর আরও আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, দুষ্কৃতীদের হাতে বিধায়কের ছাপানো প্যাড গেল কেমন করে? এটার উত্তর অবশ্য দিতে পারেননি বিধায়ক। সেটা তিনি জানেন না বলেই মন্তব্য করেছেন পুলিশের কাছে। তবে বিজেপি বিধায়কের কোনও শাগরেদ এই কাজের নেপথ্যে রয়েছে? এমন প্রশ্নও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। এই ঘটনার তদন্ত করতে আগে দু’বার বিজেপি বিধায়ককে তলব করে ছিল পুলিশ। তখন ব্যস্ততা দেখিয়ে হাজিরা এড়ালেও শনিবার শেক্সপিয়র সরণি থানায় হাজিরা দেন বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। তদন্তকারী অফিসার–সহ থানার পদস্থ অফিসাররা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের শেষে তাঁর লিখিত বক্তব্য রেকর্ড করেন তদন্তকারী অফিসার।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে একদল দুষ্কৃতী ৫ লাখ টাকা তোলা চায় কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যানকে ফোন করে। ওই চেয়ারম্যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে ফোন করতেই জানতে পারেন এমন ফোন এখান থেকে যায়নি। তখনই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাস থেকে মূল অভিযুক্ত জুনেদুল হক চৌধুরী–সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল। তারাই বিজেপি বিধায়কের প্যাড ব্যবহার করে বিধায়ক আবাসের ঘর বুক করেছিল। আর সেখান থেকে তোলাবাজির কাজ করছিল দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় মহম্মদ হামরাজ নামে এক অভিযুক্ত এখনও পলাতক।