অসম সরকার রেস্তোরাঁ, হোটেল এবং প্রকাশ্য রাস্তায় গরুর মাংস কেটে পরিবেশন এবং খাওয়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ক্যাবিনেট এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা জানিয়ে দিয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে অসমে। আর অসম সরকারের সিদ্ধান্ত বাংলায় নিয়ে আসা হবে বিজেপি ক্ষমতায় এলে। এই কথা বলেছেন খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। তার আগেই এমন ফতোয়া শুনিয়ে দেওয়ায় বাংলার মানুষের হৃদকম্পন শুরু হয়েছে।
প্রকাশ্যে গোমাংস খাওয়া এবং বিক্রি করা নিষিদ্ধ করে অসম বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছেছে। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা এই মর্মে অসমে নির্দেশিকা জারি করেছেন। আর তারপর তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতির ময়দানে। অসম ছাড়াও বিজেপি শাসিত রাজ্য রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশেও মাংসের দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে মন্দির বা যে কোনও ধর্মীয় স্থানের সামনে গোমাংস খাওয়া বা বিক্রি করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল অসম সরকার। এবার সেই নিয়মকেই আরও কড়া করে কার্যকরি করা হয়েছে। আর তাই অসম রাজ্যের বিরোধী শিবির এই নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: বাবুঘাট থেকে প্রিন্সেপঘাট পর্যন্ত বসছে শতাধিক নারকেল গাছ, কেন করছে কলকাতা পুরসভা?
এই সিন্ধান্ত ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। সেখানে এই ঘটনা বাংলায় ঘটবে এমন কথা শুনে বাংলার মাটিতে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বাংলার শিক্ষা–সংস্কৃতি অন্যান্য রাজ্যের মতো নয়। সেখানে বিরোধী দলনেতার পদে বসে বাংলায় গো–মাংস কেটে বিক্রি করা বন্ধের কথা জানিয়ে বিতর্ক তৈরি করলেন। কারণ এখানে মুসলিম অধ্যুষিত মানুষজনও বসবাস করেন। সেই সংখ্যাটা কম নয়। এই কথা বলে সংখ্যালঘু মানুষজনদের চটিয়ে দিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিষয়টি দেখা যাবে।
অসম সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পড়শি রাজ্য বাংলার সরকারও বিরোধিতা করেছে। কারণ বাংলার কৃষ্টি–সংস্কৃতির সঙ্গে অন্য রাজ্যকে মিলিয়ে ফেললে চলবে না। এখানে সব ধর্মের সমন্বয় রয়েছে। যদিও অসমের এই সিদ্ধান্তকে সদর্থক বলে দাবি করেছেন বাংলার প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়ক। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সিদ্ধান্ত সত্যিই খুব ইতিবাচক। ২০২৬ সালের নির্বাচনে সকল গো–মাতার ভক্তরা আমাদের জিতিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে আসুক। আমরাও তখন অসমের পথেই হাঁটব।’