লোকসভা নির্বাচনে ৬টি আসন কমে গিয়ে ১২টি আসনে জয় পেয়েছে বঙ্গ–বিজেপি। আর একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে সমস্ত নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে বঙ্গ–বিজেপি। অথচ দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এই বিজেপিই ১৮টি আসন পেয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। সেখানে তাঁকে সাইড করে দিয়ে ব্যাটন হাতে নেন শুভেন্দু–সুকান্ত। আর তারপর থেকে লাগাতার ভরাডুবি। আর আজ তা নিয়ে বৈঠকে বসল বঙ্গ–বিজেপির পদাধিকারীরা। আজ, বুধবার সায়েন্স সিটিতে বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠকে পর পর পরাজয়ের দায় নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী ভরা মঞ্চে জানিয়ে দিলেন, তিনি বিজেপির সংগঠনের কোনও দায়িত্বে নেই। তিনি শুধু বিরোধী দলনেতা! যে কথার পরে অনেকে মনে করতে শুরু করেছেন, শুভেন্দু লোকসভা নির্বাচন এবং সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল পরাজয়ের ‘দায়’ সুকান্ত মজুমদারের উপর চাপিয়ে দিলেন। এখানে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমি বিরোধী দলনেতা, সংগঠনের দায়িত্ব আমার নয়। সামনে থেকে এখানে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে না। চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে, তবে তার জায়গা আলাদা। আমি বিরোধী দলনেতা। আমি অর্গানাইজেশনের দায়িত্বে নেই।’ শুভেন্দুর সংগঠনের বিষয়ে এমন মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে কানাঘুষো। কারণ এই মন্তব্যে পরোক্ষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দিকে দায় ঠেলার কৌশল। কারণ রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্তই সংগঠনের হর্তাকর্তা।
আরও পড়ুন: গৃহবধূর স্বামীকে শিকলে বেঁধে উল্টো করে মারধর, নির্মম ঘটনা সোনারপুরে, পদক্ষেপ লাভলির
অন্যদিকে নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনার জন্য বুধবার বিজেপির পক্ষ থেকে সায়েন্স সিটিতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ–সহ বঙ্গ বিজেপির অন্যান্য তাবড় নেতারা ছিলেন। সেখানেই বিজেপির পরাজয়ের দায় কৌশলে সুকান্তর দিকে ঠেলে দেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘আমার সংগঠন নিয়ে যা বলার ছিল সেটা দিল্লিতে বলে এসেছি সুনীল বনসলকে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি জানিয়ে এসেছি কেমন করে বাংলাকে বাঁচানো যায়। আমি সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন কোনও মন্তব্য করি না, যাতে আমাদের বুথের কর্মী, আমাদের ভোটার হতাশ হন।’
এরপর শুভেন্দু গোটা বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাই নতুন করে স্বপ্ন ফেরি করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আগে গণতন্ত্র এখানে ফেরাতে হবে। আমরা রাষ্ট্রপতি শাসন চাই না। পিছনের দরজা দিয়ে নবান্নে ঢুকতে চাই না। আমরা বাংলায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে ভোটে ওদের পরাজিত করে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করব। লড়াই করব। মুকুল রায়ের মতো সব কেড়ে নেওয়ার পর আমি বিজেপিতে আসেনি। আমি সব ছেড়ে বিজেপিতে এসেছি। এখানেই আমার অবসর হবে। এটুকু শুধু আপনাদের কাছে বলতে চাই।’