এবার বিদ্রোহী অর্জুন সিং। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি আন্দোলনে নামতে চলেছেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তিনি জানিয়েছেন, এছাড়া আর অন্য কোনও পথ নেই। কারণ, একাধিকবার রাজ্যের মানুষের জন্য দাবি জানিয়ে তিনি হতাশ। তাঁর নিজের দল কেন্দ্রের সরকারে থাকা সত্ত্বেও বাংলার মানুষের জন্য কিছুই করছে না। কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ, রাজ্যের পাটচাষি এবং চটকল শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে তিনি চোখ বন্ধ করে আছেন। কাঁচা পাটের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত না বদলালে আন্দোলনে নামতে হবে।
ঠিক কী বলছেন অর্জুন সিং? এই বিষয়ে বারাকপুরের সাংসদ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাজ্যের ১৪টি জুট মিল বন্ধ। আরও ১০টি বন্ধের মুখে। জুটমিল শ্রমিক, পাটচাষি এবং তাঁদের পরিবার মিলিয়ে আড়াই কোটি মানুষ চরম সঙ্কটে। কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রকে বহুবার আবেদন করেছি। চিঠি লিখেছি শিল্প–বাণিজ্য মন্ত্রকে। কিন্তু কেন্দ্র কর্ণপাতই করেনি। এবার রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা ছাড়া উপায় নেই। আমার রাজনৈতিক উত্থান, কর্মকাণ্ড—সবই জুটমিল কর্মীদের ঘিরে। আমি আগে তাঁদের স্বার্থ দেখব। কোন দল, কোন সরকার কী মনে করল, আমার কিছু যায় আসে না।’
তাহলে কী বিজেপি ত্যাগ করছেন অর্জুন? সূত্রের খবর, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সাড়া না পেলে জুন মাসের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত তিনি নিতে পারেন। অর্জুন সিং অবশ্য বলছেন, ‘যদি মানুষই আমার সঙ্গে না থাকেন, তা হলে কীসের দল? আজ আমি যা হয়েছি সেটা মানুষের জন্য হয়েছি। নিজেও চটকলের শ্রমিক ছিলাম। আজ তাঁদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। ফলে দাবি না মানলে ছেড়ে কথা বলব না।’
বিজেপিতে তাহলে দ্বন্দ্ব অব্যাহত? রবিবার রাতে নয়াদিল্লি এসেছেন অর্জুন সিং। আজ, সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় জুট বোর্ডের বৈঠকে তিনি অংশ নেবেন। সেখানেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হবেন তিনি। এই সমস্যা নিয়ে বিস্ফোরক অর্জুন সিং বলেন, ‘আসলে বিজেপি সরকার, আর মন্ত্রকে বসে থাকা লোকেরা আকাশপুত্র। আকাশেই বিচরণ করেন। তাঁরা ধরিত্রীপুত্রদের সমস্যা, দারিদ্র্য বা জীবিকার সঙ্কট বুঝবেন কীভাবে?’
এই বিষয়ে অর্জুন সিং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন। অর্জুন সিং এই চিঠিতে পীযূষ গোয়েলকে সাতদিনের সময়সীমা দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘এই সাতদিনের মধ্যে আপনার পক্ষ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে মানুষের পাশে থাকার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’