কন্যাশ্রী প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি কন্নাশ্রী লিখে ব্যাপক ট্রোলড হয়েছেন। তবে তিনি যে ঘরে–বাইরে সমালোচিত হয়েছেন সেটা বেমালুম চেপে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হলে কি হবে, কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বর্ণ পরিচয় পাঠিয়ে শোরগোল ফেলে দেন। দলের শীর্ষ নেতা তথাগত রায় কার্যত তাঁকে মূর্খ বলে ওঠেন। হ্যাঁ, তিনি বঙ্গ–বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এবার যখন জানাজানি হয়েই গিয়েছে তখন সাফাই দিয়ে তিনি বলেন, ‘অনুবাদ করতে গেলে এমন একটু হয়।’ অর্থাৎ ভুল থেকে কোনও শিক্ষা তো নিলেনই না উলটে অজুহাত খাঁড়া করলেন।
এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কিসের অনুবাদ করতে গিয়েছিলেন? এই রাজ্যের প্রতিটি কোণাতেই তো লেখা হয়েছে কন্যাশ্রী কথাটি। অর্থাৎ এখানেও তিনি মিথ্যের আশ্রয় নিচ্ছেন বলে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের মত। আর কংগ্রেস বলছে, অজ্ঞতা থেকেই এই ভুল হয়েছে। তাই বর্ণ পরিচয় পাঠানো হয়েছে। পিডিএফ এবং স্পিড পোস্টে পাঠানো হয়েছে রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে।
শুক্রবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন দিলীপ ঘোষ। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সংসদের বাইরে তাঁর হাতের প্ল্যাকার্ডে ভুল বানান কেন ছিল? তৎক্ষনাৎ দিলীপের সাফাই, ‘অনুবাদ করতে গেলে এমন একটু হয়। দিল্লিতে তো আর বাংলা নেই। ওরা হিন্দি থেকে বাংলা অনুবাদ করে।’ যেখানে বিশ্বমঞ্চে কন্যাশ্রী স্বীকৃতি পেল, সেখানে তাঁদের কোনও ভুল হলো না। ভুল হলো দিলীপ ঘোষের! এটা কেউ মানতে রাজি নয়।
কারণ নিজের রাজ্যেই তো বাংলায় একাধিক জায়গায় লেখা রয়েছে। তাহলে দিল্লিতে অনুবাদ করতে গেলেন কেন? সমালোচনার জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা এটা সুযোগ দিয়েছি অনেককে খবর ছাপানোর জন্য। প্রচার তো আজকাল উলটোটাই হয়।’ একে তো নিজে ভুল করেছেন তার উপর অজুহাত দিয়েছেন, তার উপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘আমি জ্যাকেট পড়ে নৌকায় চেপে বন্যাত্রাণ বিলি করতে গেলে যা ছবি আসে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় জলে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে সেটা বেশি আসে। এটাই নিয়ম। যাঁরা মতবাদ দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।’ এখানেও তিনি সবাইকে উলটে দোষারোপ করতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
কন্নাশ্রী লেখা বানান দেখে চোখ কপালে উঠেছিল নেটিজেনদের। সেই প্ল্যাকার্ড নিয়েই প্রতিবাদে নেমেছিলেন দিলীপ ঘোষ সংসদের বাইরে। কেউ একবার ভুলটা ধরিয়ে দিলেন না? উঠছে প্রশ্ন। এই নিয়ে এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘উনি নারীর সম্মান চাইছেন, বলছেন কন্যাশ্রী চান না। কিন্তু আমরা এবার বলছি বাংলা ভাষার সম্মান ফেরত দিন। একজন রাজ্য সভাপতি কীভাবে ভুল বানান হাতে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন! আগামী প্রজন্মকে এই ভুল বানান কি শেখাতে চাইছে বিজেপি?’