আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কাটার ভিডিয়ো তিনিই টুইটারে পোস্ট করেছিলেন। বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসা চার আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এবার এই অভিযোগ নিয়ে লিখলেন চিঠি। আর নালিশ করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে। হ্যাঁ, এই চিঠি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে লিখেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এমনকী এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চেয়ে সোমবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ।
ঠিক কী নিয়ে অভিযোগ? কয়েকদিন আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে কিছু মহিলা এবং তাঁদের পরিবার তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তারপর আবার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁদের মধ্যে থেকে চারজন মহিলা ফিরে আসেন। এই চারজন মহিলাকে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ হিসাবে দণ্ডি কাটানো হয় বলে বিজেপির অভিযোগ। ওই চারজন মহিলা আদিবাসী সম্প্রদায়ের। এই অভিযোগ নিয়েই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘নিম্নরুচির মানসিকতা’ বলে সোচ্চার হয় বিজেপি। ঘটনাচক্রে দেশের রাষ্ট্রপতি আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি। তাই দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতিকে সুকান্ত মজুমদার চিঠি লিখে রাজনৈতিক চাল দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ঠিক কী লিখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো চিঠিতে সুকান্ত মজুমদার লম্বা নালিশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যন্ত্রণার সঙ্গে একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আপনার কাছে তুলে ধরছি। আমার লোকসভা কেন্দ্র বালুরঘাটের অন্তর্গত তপন বিধানসভা এলাকায় আদিবাসী পরিবারের প্রায় ২০০ জন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস ভয় দেখিয়ে তাঁদের আবার দলে যোগদান করিয়েছে। আর অমানবিক ভাবে জোর করে তাঁদের দণ্ডি কাটতে বাধ্য করা হয়েছে। অতীতের বিভিন্ন ঘটনাবলি এবং নানা মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট আদিবাসীদের প্রতি তৃণমূলের নেতাদের মানসিকতা কেমন। তবে এটা আর বরদাস্ত করা যাবে না।’
আর কী জানা যাচ্ছে? এই চিঠি রাষ্ট্রপতিকে দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় তফসিলি জনজাতি কমিশনের চেয়ারপার্সনকেও চিঠি লিখেছেন সুকান্ত মজুমদার। তপনের ঘটনায় অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন তিনি। যাঁরা দণ্ডি কেটেছিলেন তাঁরা হলেন, মার্টিনা কিস্কু, শিউলি মারডি, ঠাকরান সোরেন এবং মালতী মুর্মু। দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ফিরে আসেন তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে। অভিযোগ, বালুরঘাট কোর্ট মোড় থেকে পার্টি অফিস পর্যন্ত দণ্ডি কাটানো হয় তাঁদের। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস ঘটনার নিন্দা করে প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে ইতিমধ্যেই মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। সেখানে এসেছেন স্নেহলতা হেমব্রম।