তৃণমূল কংগ্রেস আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াতে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়ে এসেছে। আর তাতেই বেজায় চাপে পড়ে গিয়েছে বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। এই পরিস্থিতিতে যেটুকু ভোটব্যাঙ্ক আছে সেটা অটুট রাখতে পালটা ‘গ্রামে চলো’ ডাক দিল রাজ্য বিজেপি। এটা তাদের একটা শেষ চেষ্টা বলে অনেকে মনে করছেন। বিজেপি নেতারা গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে পংক্তিভোজেও বসবেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০২৩ সালে দলীয় কর্মসূচিতে রাজ্যে আসার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে জেপি নড্ডার। শাহ–নড্ডা জুটি প্রচারে এসে মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন। আবার দলের বুথস্তরের সংগঠনের বেহাল অবস্থা নিয়ে বৈঠকও করবেন বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের সঙ্গে। জেলায় জেলায় এখন বিজেপির সংগঠন ভেঙে চুরমার হযে গিয়েছে। সেই রিপোর্টই শাহ–নড্ডার হাতে তুলে দিয়েছেন সুনীল বনসল এবং মঙ্গল পাণ্ডে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতাদের রোষানলে যাতে না পড়তে হয় তার জন্য সংগঠনকে টেনে তুলতে গ্রামে ছোটার পরিকল্পনা নিয়েছে সুকান্ত–শুভেন্দুরা। ঠিক হয়েছে, ১০০ বিজেপি নেতারা যাবেন ১০টি করে গ্রামে।
বিষয়টি ঠিক কী হতে চলেছে? কেন্দ্রীয় নেতারা কড়া ফরমান জারি করে বলেছেন, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের এবার থেকে অঞ্চলে যেতে হবে। গ্রামের দায়িত্ব নিতে হবে। ১০০ জন প্রথমসারির বিজেপি নেতার উপর ১০টি করে গ্রাম বা অঞ্চলের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে। মোট একহাজার অঞ্চলে সাধারণ গ্রামবাসীদের সঙ্গে মিলিত হবেন ওই ১০০ জন বিজেপি নেতা। দলের সাংসদ, বিধায়ক, বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যাঁরা আছেন, দলের রাজ্য সভাপতি, বিরোধী দলনেতা, রাজ্যের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতারাও যাবেন। সোমবার ভগবানপুরের অঞ্চল সম্মেলন থেকে দলের এই কর্মসূচির কথা জানান শুভেন্দু অধিকারী।
নেপথ্যে ঠিক কী উঠে আসছে? সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেস গ্রামে মানুষের সামনে যাবে উন্নয়ের ডালি নিয়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারে থেকে গ্রামীণ আর্থ–সামাজিক কোনও উপকারে আসেনি বিজেপি। শুধু দুর্নীতির কথা বলে ভোট পাওয়া সম্ভব নয়। সেটা বুঝেই কেন্দ্রীয় নেতারা নির্দেশ দেন। আর তারপরই এই নির্দেশ শুভেন্দু অধিকারী পেয়ে পাল্টা গ্রামে চলো ডাক ছাড়েন। এই বিষয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা গ্রামে যাই, থাকি। তাই ওরাও একই ভাবছে।’