আজ, বিজেপির নবান্ন অভিযান। সেখানে অশান্তি পাকানোর বিশেষ ছক কষেছে গেরুয়া শিবির। তাই নবান্ন পৌঁছনোর আগেই বিজেপিকে রুখে দিতে মজুত রয়েছে একাধিক জল কামান। মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। হাওড়া ময়দান থেকে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে মিছিল আটকে দিতে জিটি রোডের ওপর তৈরি করা হয়েছে পুলিশের ব্যারিকেড। আবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল সাঁতরাগাছিতে আটকে দিতে সকালেই গার্ড রেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হল কোনা এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। গার্ড রেল ঝালাই করে রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কলেজ স্কোয়ারে মিছিলের নেতৃত্বে থাকছেন দিলীপ ঘোষ। মিছিল আটকাতে বিভিন্ন জায়গায় ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড রাখা রয়েছে।
কেমন ছক কষেছে বিজেপি? গোয়েন্দারা সুনির্দিষ্ট সূত্রে জেনেছেন, নবান্ন অভিযানকে সামনে রেখে বড়সড় অশান্তি পাকানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে সশস্ত্র দুষ্কৃতী এনে গোলমাল পাকানোর ছক বাস্তবায়িত করা হবে। আসানসোল–দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলকে করিডর করে নবান্নের পথে পাড়ি দেবে দুষ্কৃতীরা। তাহলেই জমায়েতে উত্তেজনা বা অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। এই ছকের কথা জানতে পেরে গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই রীতিমতো ঘুম ছুটেছে পুলিশের। ‘দুষ্কৃতীরা’ সংখ্যায় কতজন, কখন ঢুকছে, কোথায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে—এসব তথ্য যেমন গোপনে খোঁজখবর করা হচ্ছে, তেমনই পুলিশের নজরদারি কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে।
কাকে এই গোলমালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? সূত্রের খবর, এই হামলার দায়িত্বে রয়েছেন জনৈক মুখার্জিবাবু। তিনিই নাকি দুষ্কৃতী জোগাড়ের ‘বরাত’ পেয়েছেন। সুতরাং তাঁর গতিবিধির উপর সবসময় নজর রাখছে পুলিশ। আবার বাংলা–ঝাড়খণ্ড সীমানায় তল্লাশি, নাকা চেকিং শুরু করা হয়েছে। এখানে বহিরাগতরা কোন কোন হোটেলে এসে উঠছে, সেই তথ্যও জোগাড় করছে পুলিশ। কারণ বিজেপি চাইছে একটা বড় সংঘর্ষ–সহ রক্তারক্তির কাণ্ড ঘটিয়ে শিরোনামে আসতে। তারপরই রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করা হবে। তাই যেভাবেই হোক, এই ছক ভেঙে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আসানসোল–দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট।
কী তথ্য পাচ্ছে পুলিশ? এই গোটা পরিকল্পনা বা ছকের বিষয়ে আসানসোল–দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অভিষেক মোদী বলেন, ‘ভিন রাজ্য থেকে দুষ্কৃতী নিয়ে এসে রাজ্যে হিংসা ছড়াতে পারে বলে সতর্কবার্তা রয়েছে। আমরাও চূড়ান্তভাবে তৎপর রয়েছি। ঝাড়খণ্ড সীমানা পেরিয়ে আসা গাড়িগুলির উপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।’ সুতরাং বিজেপির আজকের এই নবান্ন অভিযান কর্মসূচি ঘিরে রীতিমতো সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। সেযা বাড়তি মাত্রা পেয়েছে গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার পর। ওই বার্তা পেয়ে তদন্ত শুরু করতেই ‘মুখার্জিবাবু’র নাম উঠে আসে। তাঁর ডেরাতেই নবান্ন অভিযান নিয়ে বৈঠক হয়েছে বলে সূত্রের খবর।