একে তো পরাজয়ের জ্বালায় জ্বলছে রাজ্য বিজেপি। তার উপর দলের শীর্ষ নেতা তথাগত রায়ের একের পর এক টুইট বঙ্গ–বিজেপি নেতাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা করে ছেড়েছে। ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পরই ‘নগরের–নটী’ বলে সেলেব প্রার্থীদের আক্রমণ করেছিলেন তিনি। তা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য–রাজনীতি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বোমা ফাটালেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল।
এবার তিনি বঙ্গ–বিজেপির দা্যিত্বপ্রাপ্ত চার নেতাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এই চারজন হলেন–কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, শিবপ্রকাশ এবং অরবিন্দ মেনন। তিনি টুইটে লেখেন, ‘এই চার নেতা কৈলাস– দিলীপ–শিব–অরবিন্দ আমাদের সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম কাদায় মিশিয়ে দিয়েছেন। হেস্টিংস অফিসের মাথায় যাঁরা বসে আছেন তাঁরা বিশ্বের সর্ববৃহৎ দলের মর্যাদা রাখতে পারেননি।’ তথাগত রায়ের এই টুইট এখন পদ্মে কাঁটা হিসাবে বিঁধছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা নেতা–নেত্রীদের টিকিট দেওয়া নিয়েও তিনি উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন। সাত তারা হোটেলে বসে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা আবর্জনাদের টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তথাগত রায়ের আরও অভিযোগ, ১৯৮০ সাল থেকে যাঁরা স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য তাঁরা দলের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। আজ তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসেরদ্বারা অত্যাচারিত। কিন্তু ওই কেডিএসএ (চার নেতা) উদ্ধার করতে যাচ্ছেন না। তথাগতের এই টুইটে এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিজেপি ছেড়ে অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে গিয়ে যোগ দেবে। তাতে বাংলায় যেটুকু সংগঠন তৈরি হয়েছিল, সেটুকুও মুছে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কিন্তু রাজ্যে এই প্রথম বিজেপি তিনটি আসন থেকে ৭৭টি আসন পেয়েছে। অর্থাৎ আসন সংখ্যা বেড়েছে। এই বিষয়ে তথাগত রায়ের টুইট বক্তব্য, এটা একটা নিম্নমানের, নিরুৎসাহের, ভাড়াটে কিছু লোক যাদের কোনও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নেই, বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা নেই, বাংলার সংবেদনশীলতা নিয়ে কোনও নেই তাদের ব্যাখ্যা। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যা এবং ফিটার মিস্ত্রির শংসাপত্র আছে। তাদের কাছ থেকে আর কি আশা করা যায়? এভাবেই বর্ষীয়ান এই পদ্ম–নেতা বিঁধেছেন রাজ্য নেতৃত্বকে। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।