আজ বিধানসভায় এসে মুকুল রায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সদস্যপদে মনোনয়ন জমা দিয়ে গিয়েছেন। তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার তিনি এই কমিটির চেয়ারম্যান হতে চলেছেন। আর তাই এই কমিটির চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়কে আনা হলে সমস্ত কমিটি থেকে বয়কটের পথে যেতে পারে বিজেপি। দলের অন্দরে এই নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়ে গিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিরোধী দলের নেতাকেই এই পদ দেওয়া হয়। মুকুল রায় নথি অনুযায়ী, এখনও বিজেপির বিধায়ক। আর তিনি এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তাহলে কীভাবে মুকুলকে এই কমিটির দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব? এই প্রশ্ন তুলেই বিধানসভার কার্যত সমস্ত কমিটি বয়কট করার কথা ভাবছে বিজেপি।
যদিও এই বিষয়ে আজ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমাকে বিচারপতি ১৬ তারিখ শুনানির জন্য ডেকেছেন। শুনানিতে আসব। সমস্ত নথি জমা দেব। তারপরে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করব না। আদালতে ফাইনাল হয়ে যাবে। এমএলএ থাকবে না তো পিএসি কি আর সদস্য কি? ওইসব কথা বলে ভাবের ঘরে বসে চুরি করে লাভ নেই। সমস্ত তথ্য খুব সুন্দর কাজ করেছে। কালিদাসের মতো কাজ করেছে। আমার সুবিধা হয়েছে। আমার লড়াইটা দলত্যাগ বিরোধী আইনের লড়াই। আমার লড়াই ওর সঙ্গে বিধায়ক পদ খারিজের লড়াই। এতে আমি আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম। আমি সম্মানীয় অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করব।’
বিজেপি চাইছে, অশোক লাহিড়ীকে পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান করতে। মুকুল রায়কে চেয়ারম্যান করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়েছে বিজেপি। তাদের সাফ কথা, যদি পিএসি’র চেয়ারম্যানের পদ তাদের না দেওয়া হয়, তবে তারা কোনও কমিটিতেই থাকবে না। আর তাতে আখেরে তৃণমূল কংগ্রেসেরই লাভ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
জানা গিয়েছে, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল বুধবার। যেখানে শাসকদলের পক্ষ থেকে ১৪ জনের নাম দেওয়া হয়। বিরোধীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় ৬ জনের নাম। দেখা গেল, শাসকদলের পক্ষ থেকে জমা পড়া তালিকায় মুকুল রায়ের নামও রয়েছে। মুকুলের নাম সেখানে প্রস্তাবক হিসেবে রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাখ্যা, মুকুল রায় এখনও কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক। তাই বিরোধীদের হাতেই তো পিএসি’র দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে।
বিজেপির পালটা দাবি, মুকুল রায় বিজেপি বিধায়ক হলেও তিনি যে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তা গোপন নেই। তাই যদি অশোক লাহিড়ীকে চেয়ারম্যান না করা হয় তাহলে বিধানসভার সমস্ত কমিটি বয়কট করতে পারে বিজেপি। বিধানসভার ৪০টি কমিটির মধ্যে ১০টি কমিটি বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বলে খবর।