বিজেপি প্রথমে ভেবেছিল মুকুল রায়কে রাজ্যসভায় পাঠাবে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তা না করে প্রাক্তন প্রসার ভারতীর অধিকর্তা জহর সরকারকে প্রার্থী করে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে বিজেপির পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তাই রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে বিজেপি। হার নিশ্চিত জেনেও রাজ্যসভায় প্রার্থী দিতে চাইছে বিজেপি। কারণ সেই মুকুল রায়। যদি রাজ্যসভার প্রার্থী হতেন মুকুল তাহলে বিধায়ক পদ ছাড়তে হতো। কিন্তু তা তো হলো না। এবার তিনি কাকে ভোট দেন তা জানতে চায় বিজেপি। তাই এই কৌশলী পদক্ষেপ। যদিও এই বিষয়ে মুখ খোলেনি কোনও বিজেপি নেতা।
কিন্তু এই পদক্ষেফের কারণ কি? সূত্রের খবর, রাজ্যসভার নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী দেওয়ার পিছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া মুকুল রায়ের অবস্থানটা প্রকাশ্যে নিয়ে আসা। মুকুল রায় ভোটাভুটিতে কোনদিকে ভোট দেন, সেটা জানতে চায় বঙ্গ–বিজেপি নেতারা। মুকুল রায় যদি হুইপ অমান্য করে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেন তাহলে দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে সরব হওয়ায় সুযোগ থাকছে। এটাই চাইছে বিজেপি।
রাজ্যসভার নির্বাচনে দলীয় বিধায়কদের হুইপ জারি করতে পারে দল। আর সেই বিধায়ক যদি হুইপ না মানেন তাহলে দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়ক–পদ বাতিল করার আবেদন করা যায়। তাই প্রার্থী দিতে চায় গেরুয়া শিবির। আর মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিলেই কেল্লাফতে। সেটাই চাইছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য সাংবাদিকদের জানান, রাজ্যসভায় প্রার্থী দেওয়া নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
উল্লেখ্য, দীনেশ ত্রিবেদীর ছাড়া আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে প্রসার ভারতীর প্রাক্তন অধিকর্তা জহর সরকারকে। জহরবাবু মোদী সরকারের প্রবল সমালোচক হিসাবে পরিচিত। ২০১৬ সালে মোদী সরকারের কাজকর্ম পছন্দ না হওয়ায় প্রসার ভারতীর সিইও পদ থেকে অবসর নেন প্রাক্তন এই আমলা। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই প্রবল মোদী বিরোধিতা দেখা যায় তাঁর লেখনীতে। এখন দেখার শেষপর্যন্ত জল কতদূর গড়ায়।