আবার বউবাজারে ফিরছে ফাটল আতঙ্ক। ২০১৯ সালের দুঃসহ স্মৃতি ফিরল বউবাজার এলাকায়। মেট্রো রেলের কাজের জেরে মাঝরাতে একাধিক বাড়িতে বড় ফাটল ধরা পড়েছে। দুর্গা পিতুরি লেনের পাশের গলি মদন দত্ত লেন। আর সেখানেরই একাধিক বাড়িতে বড় বড় ফাটল আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করেছে। আর আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। কোনওরকমে ঘর ছেড়েছেন মানুষজন। চোখের সামনে একরাশ শুধু অনিশ্চয়তা নিয়ে রাস্তায় পরিবারগুলি। আজ, শুক্রবার সকালে মেট্রো রেলের অফিসাররা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি পরিদর্শনে গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ভিটেছাড়া বাসিন্দারা।
ঠিক কী মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটেছে বউবাজারে? এখানে রাস্তার ধারে এক মহিলাকে ছেলের হাত ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এই মহিলার স্বামী গত ১৮ সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছেন। ছেলে পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। পরিবারের কেউ তাঁর সঙ্গে নেই। সেখানে শুক্রবার সকালে মাথার উপরের ছাদটাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বিধবা বধূ নবনীতা বড়ুয়ার। বউবাজারের মদন দত্ত লেনে তাঁর বাড়িতেও দেখা গিয়েছে বড় ফাটল। এখন তিনি খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? চলতি বছরের মে মাসেও ফাটল আতঙ্ক দেখা দেয় বউবাজারের স্যাকরাপাড়া লেনে। তারপর ১৩ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার মাঝরাতে ফের সেই বিভীষিকাময় দিন দেখা গেল। আর তার জেরে শুক্রবার ছেলেকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়িয়েছেন নবনীতা বড়ুয়া। কোথায় আশ্রয় নেবেন, জানেন না। ভয়াবহ ফাটল ধরা পড়েছে তাঁর বাড়িতে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দারা ১০টি বাড়ি খালি করে দিয়েছেন।
কী বলছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ? কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাসিন্দারা ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন। মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারদের অনুমান, গ্রাউটিংয়ের কাজ চলার সময় সুড়ঙ্গে জল ঢুকে বিপত্তি ঘটেছে। সুড়ঙ্গে জল ঢুকতে শুরু করলে ঘটে বিপত্তি। আর তার জেরে একটার পর একটা বাড়িতে ফাটল ধরেছে। সুখী গৃহকোণে জমেছে অনিশ্চয়তার মেঘ। কিন্তু আশ্রয়হীনরা এখন কী করবে? সেটাই ভাবাচ্ছে।