রাস্তাজুড়ে জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে। স্টোভ, গ্যাস সিলিন্ডার, বাসনপত্র থেকে তোষক, বালিশ, ঠাকুরের ছবি, সিংহাসন, সোনার দোকানের যন্ত্রপাতি–সহ নানা গৃহসামগ্রী। এটাই এখন বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের ছবি। যেন ‘উদ্বাস্তু গ্রাম’। কারণ মেট্রো রেলের কাজের জেরে ফের বিপত্তি। একাধিক বাড়িতে ফাটল আগেই দেখা দিয়েছিল। শুক্রবার আরও দুটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে খবর। এই নিয়ে রেলমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী।
ঠিক কী ঘটেছিল বউবাজারে? জানা গিয়েছে, বুধবার হঠাৎ দুর্গা পিতুরি লেনের ৮–১০টি বাড়ির দেওয়ালে ফাটল দেখা দিতে শুরু করে। রাত যত বেড়েছে, ফাটলও তত চওড়া হয়েছে। মেট্রো রেলের যেখান থেকে টানেল বোরিং মেশিন তোলা হয়েছিল, সেখানে কংক্রিট করার কাজ চলছে। কিন্তু তাসত্ত্বেও কোনও কারণে মাটির নীচে থেকে জল উঠে আসে। ওই জায়গা কংক্রিট দিয়ে ভরাট করা হলেও ততক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ৩০ থেকে ৩৫টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। বাড়ি পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে মেট্রো রেলের কাজের জেরে এই ফাটলের আতঙ্কে।
ঠিক কী লিখেছেন অধীর চৌধুরী? এই ঘটনা নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে বহরমপুরের সাংসদ লেখেন, ‘কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই বউবাজার এলাকায় মাটির নীচে টানেল বোরিং মেশিনের গতিবিধির কারণেই বাড়িগুলিতে ফাটল ধরেছে। ওই এলাকার মানুষ ভীত–আতঙ্কিত। আমি আপনাকে এই ঘটনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। কতটা বিপদ হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধও জানাচ্ছি।
’আজ কী হতে চলেছে? আজ, শুক্রবার মেট্রোর কাজের দায়িত্বে থাকা কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠক হওয়ার কথা। ঘটনার পর তড়িঘড়ি কলকাতায় ফেরেন ওই নির্মাণকারী সংস্থার এমডি সি এন ঝা। সূত্রের খবর, তিনি ১৭ মে পর্যন্ত ছুটি নিয়েছিলেন। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা সেখানকার বাসিন্দাদের পাশেই রয়েছেন। ৮৭ জনকে হোটেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।